মানুষের মতো দেখতে রোবট চীনের নতুন বিস্ময়!
ভাবো তো—একদিন তোমার পাশে বসে কেউ কথা বলছে, হাসছে, চোখের পলক ফেলছে…কিন্তু সে মানুষ নয়, রোবট! ঠিক এমনই এক চমক নিয়ে এসেছে চীনের একটি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান।
সাংহাইয়ের অ্যাহেড্যাম টেকনোলজি তৈরি করেছে এক নতুন প্রজন্মের বায়োনিক হিউম্যানয়েড রোবট, যার নাম ইএলএফ ভিওয়ান। এই রোবট দেখতে এতটাই বাস্তব মনে হয় যে প্রথম দেখায় কেউ সহজে বুঝতেই পারবেন না—সে আসলে মানুষ নয়।
এই রোবটের রয়েছে ৩০টি চলনক্ষম অংশ (ডিগ্রিস অব ফ্রিডম)। এর মুখের ৩০টি পেশি নড়াচড়া করে ছোট ছোট ব্রাশলেস মোটর দিয়ে, যা একে হাসতে, কথা বলতে বা মুখভঙ্গি বদলাতে সাহায্য করে। এমনকি এই রোবট চোখের পলক ফেলতে পারে, মাথা নাড়াতে পারে, আর মানুষের মুখ দেখে তার অনুভূতি বুঝে নিতে পারে।
এই কাজটা সম্ভব হচ্ছে উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল এবং ভিশন ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল, যা মানুষের কথা ও আচরণ বুঝে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে পারে। মানে কেউ হাসলে সে হাসবে, কেউ দুঃখী মুখ করলে সে উদ্বিগ্ন হবে!
রোবটের মুখে লাগানো হয়েছে বায়োনিক স্কিন, যা মানুষের ত্বকের মতো নরম ও নমনীয়। এতে তৈরি হচ্ছে একেবারে বাস্তবসম্মত মুখভঙ্গি, যেন সত্যি মানুষ কথা বলছে!
অ্যাহেডফর্ম কোম্পানির মতে, তারা চায় রোবট যেন শুধু মেশিন না হয়—বরং মানুষের সহচর ও সহকারী হয়। ভবিষ্যতে এই ধরনের রোবট হয়তো বয়স্ক মানুষদের সেবা দেবে, শিক্ষায় সহায়তা করবে, বা বাড়ির কাজেও সাহায্য করবে।
তবে এই রোবটকে ঘিরে কিছু প্রশ্নও উঠেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষ আর রোবটের সীমা মুছে গেলে অদ্ভুত অনুভূতি তৈরি হতে পারে—যেখানে কিছু একটা অস্বাভাবিক লাগে, যদিও দেখতে সব ঠিকই থাকে। এ জন্যই এই রোবটদের মুখের ভঙ্গি, চোখের গতি ও কণ্ঠস্বর যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এক সময় যে রোবটরা ছিল স্রেফ কল্পবিজ্ঞানের গল্পে, তারা এখন আমাদের বাস্তব জীবনের দরজায়। হয়তো আগামী দিনগুলোয় এমন এক বন্ধু তোমার সঙ্গেও থাকবে—যে সব জানে, কথা বলে, কিন্তু মানুষ নয়।
তুমি কি চাও, এমন এক রোবট বন্ধু তোমারও থাকুক?
(তথ্যসূত্র: অ্যাহেডফ্রম টেকনোলজি, সিজিটিএন, প্রভাত রঞ্জন মিশ্রর প্রতিবেদন, অক্টোবর ২০২৫)