অতিথি

অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা

ছোটবেলায় আব্বুর কাছে পাখি কেনার জন্য অনেক বায়না ধরেছি, কিন্তু আব্বু কখনো কিনে দেয়নি। একদিন হঠাৎ কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য যখন রেডি হচ্ছিলাম, আম্মু ডাক দিয়ে বলল, ‘দেখে যাও, বাসায় অতিথি এসেছে।’ আম্মুর কথা শুনে ভেবেছিলাম বাসায় কোনো কাজিন আসছে বোধ হয়। গিয়ে দেখি এই অতিথি মানুষ নয় বরং একটা অসহায় কবুতর। অতিথিকে দেখে আমি যেমন অবাক হয়েছিলাম, তেমনি খুশিও হয়েছিলাম আমি। কিন্তু কোচিংয়ের তাড়া থাকায় অতিথির সঙ্গে ভালো করে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাইনি। একটু খারাপ লেগেছিল, কিন্তু বাসায় ফিরে অতিথিকে দেখে মনটা আবার আগের মতোই খুশি হয়ে গিয়েছিল। প্রথমে অতিথি যেমন আমার কাছে আসতে ভয় পেয়েছিল, তেমনি ভয় পেয়েছি আমিও। তাকে ধরার সাহস পাচ্ছিলাম না। ধীরে ধীরে অতিথির সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে আমার। আমার মন খারাপ হলে ওর সঙ্গে কথা বলতাম (হয়তো ও কিছু বলতে পারত না কিন্তু আমার মনে হতো ও বোধ হয় আমার কথা বুঝতে পারছে)। অতিথির টুক্কুর টুক্কুর করে খাওয়ার শব্দ আমার খুব ভালো লাগত। অতিথি এখন আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু ওর সঙ্গে কাটানো স্মৃতিগুলো আমার সারা জীবন মনে থাকবে।

লেখক: অষ্টম শ্রেণি, বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, হবিগঞ্জ