অন্ধকারে গন্ডগোল

অলংকরণ: রাকিব রাজ্জাক

গ্রীষ্ম মানেই গরমের প্যারা। তখন কি আর স্কুলে যেতে ভালো লাগে? তা–ও আম্মুর বকুনির জন্য প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয়। এমনই একদিন গরমের সময় স্কুল থেকে ফিরে যথারীতি খেলার মাঠে খেলতে গেলাম। মাঠে যেতে না যেতেই শুনলাম বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ চলছে। খেলা শুরু হবে সন্ধ্যায়। তাই খেলা দেখার জন্য একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলাম। রিমোট নিয়ে টিভির সামনে বসতেই ঠিক বিদ্যুৎ চলে গেল। কী বিরক্তিকর মুহূর্ত! ম্যাচ বোধ হয় শুরু হয়ে গেছে। বাসায় আর ভালো লাগছিল না। আস্তে করে ছিটকিনিটা খুলে বেরিয়ে পড়লাম বাইরে। বাসার পাশেই চায়ের দোকান। দেখলাম, দোকানে বেশ ভিড়। সবাই খেলা দেখছে। ভাবলাম, বিদ্যুৎ না থাকার পরও তারা কীভাবে খেলা দেখছে! ভাবতে ভাবতে ঢুকে পড়লাম দোকানে। আমার কয়েকজন বন্ধুকেও দেখতে পেলাম সেখানে। তাদের মধ্যে একজন রকিব। রকিবের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। দেখলাম মোবাইলে খেলা দেখছে সবাই। ভিড়ের কারণে আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম না। রকিবকে জিজ্ঞেস করলাম স্কোর কত। সে কোনো উত্তরই দিল না। রকিবের কাঁধে হাত দিলাম, তার শরীরটা কেমন যেন বড় মনে হলো। অন্ধকারে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। আবারও স্কোর জিজ্ঞেস করলাম, কিন্তু সে কোনো উত্তর দিল না। মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। তার মাথার চুল ধরে ঝাঁকাতে শুরু করলাম। কে যেন বেয়াদব, ননসেন্স বলে গালি দিচ্ছিল। ঠিক সেই সময় বিদ্যুৎ চলে এল। যা দেখলাম, তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না আমি। দেখলাম, আমি আমাদের স্কুলের সবচেয়ে রাগী স্যারের চুল ধরে আছি। মাথাটা কেমন যেন ঘুরে উঠল। দোকানের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। লুকিয়ে লুকিয়ে হাসছে কেউ কেউ। স্যার আমাকে কিছু বলার আগেই আমি সেখান থেকে হাওয়া হয়ে গেলাম।

লেখক : শিক্ষার্থী, ফটিকছড়ি করোনেশন সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়, চট্টগ্রাম