আমি কেন খুশি

অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা

আমি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ক্লাস হবে তিন দিন। স্কুল খোলার আগে আমি ব্যাগ গুছিয়ে নিয়েছি। পরে স্যারের কাছেও জেনে নিলাম, কোন ক্লাসগুলো হবে। বন্ধুদেরও জানিয়ে দিলাম।

আমি স্কুলের জন্য এত কেন খুশি, তার কিছু কারণ আছে।

১. প্রথম বেঞ্চের বসার জন্য; ২. প্রথম বেঞ্চে বসে যে লেখাগুলো স্যার দেন, সেগুলো ভালো করে দেখে লেখার জন্য; ৩. সবার সঙ্গে বেসমেন্টে খেলার জন্য; ৪. টিফিন শেয়ার করার জন্য; ৫. সবার সঙ্গে কথা বলার জন্য।

প্রথম বেঞ্চে বসতে আমি খুবই আগ্রহী। আমার লিখতে ভালো লাগে। তাই স্কুলে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়ি। আমাদের স্কুলে একটি বেসমেন্ট আছে। সেখানে আমরা সবাই খেলতে যাব, কীভাবে যাব, এখন সেটা এক অ্যাডভেঞ্চার!

আমাদের অ্যাডভেঞ্চার শুরু হলো! প্রথমে আমি, মাইশা ও তানহা সিঁড়ি দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু মিস এসে আমাদের বেসমেন্টে যেতে মানা করলেন। আমরা সবাই মন খারাপ করে থাকলাম। বসে বসে দেখলাম, সবাই কী সুন্দর খেলা করছে বেসমেন্টে, আমরাই শুধু বসে বসে তাদের দেখছি। হঠাৎ করে আমার মাথায় বুদ্ধি এল। আমি মাইশা আর তানহাকে বললাম, ‘সহজ উপায়ে তো আমরা বেসমেন্টে যেতে পারি! সিঁড়ি দিয়ে যেতেই হবে, এমন কোনো কথা আছে? আমরা যেখানে বসে আছি, সেখান থেকেই দেখতে পাচ্ছি আমাদের সামনে বেসমেন্ট, আর সেখানে কোনো মিস নেই! তাহলে আমরা এতক্ষণ সময় নষ্ট করলাম কেন? আমরা এতক্ষণ খেলতাম, মজা করতাম!’

এই বলে এক দৌড়ে চলে গেলাম বেসমেন্টে! আমায় দেখে সবাই সাহস করে দৌড় দিয়ে গেল! ওরা যেহেতু এসে গেছে, তখন আমি বললাম, ‘চলো, আমরা দৌড়াদৌড়ি খেলি!’

নামার সময় বেসমেন্ট কেমন যেন নিচু হয়ে যায়! এ জন্য এই জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে অনেক মজা লাগে! কিন্তু বেসমেন্টের ওপরে যখন আমরা উঠি, তখন অনেক সময় লাগে, হাঁপিয়ে উঠি।

এখন আমাদের দৌড়াদৌড়ি শুরু করার পালা!

আমি বললাম, ‘১, ২, ৩, ৪, ৫ সবাই রেডি তো?’

দৌড় শুরু হলো। আমি প্রথম হলাম! তানহা দ্বিতীয় আর মাইশা তৃতীয় হলো!

দৌড়াদৌড়ির মজা কখনো ভোলা যায় না!

লেখক: চতুর্থ শ্রেণি, কে সি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা