কঙ্কাল ভূত

অলংকরণ: রাকিব রাজ্জাক

বিকেলে স্কুলমাঠে ক্রিকেট খেলছিলাম আমরা। ব্যাটিংয়ে এসেই ফর্মের তুঙ্গে পৌঁছে গেলাম। খুব জোরে হিট করেছিলাম প্রতিটা বল। একেবারে চার-ছক্কার বন্যা বয়ে গেল স্কুলের মাঠে। একটা শট এমনভাবে মারলাম যে স্কুল বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে গেল বল। ভয় পেয়ে গেলাম। যেনতেন কোনো জানালা নয় এটা, একেবারে সায়েন্স ল্যাবের জানালা ভেঙে ফেলেছি আমি। সবাই মিলে ভাবতে শুরু করলাম, কী করে আনা যায় বলটা। এই সায়েন্স ল্যাবটাকে প্রচণ্ড ভয় পাই আমরা। কারণ আস্ত একটা কঙ্কাল আছে সেখানে। তার ওপর আবার সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে তখন। কেউ ভেতরে যেতে সাহস পাচ্ছে না। কিন্তু আমাকে তো যেতেই হবে, বলটা তো আমিই পাঠিয়েছি ওখানে। সাহস করে এগোলাম। বন্ধু মিতুলও এল আমার সঙ্গে। দুরুদুরু বুকে পৌঁছে গেলাম ল্যাবের সেই কক্ষটার কাছাকাছি। গিয়ে দেখি দরজা খোলা। কী আশ্চর্য! ভেতরে প্রচণ্ড ধোঁয়াও দেখলাম। মুখ ফুটে না বললেও আমরা দুজনেই ভয়ে কাবু। কোনোমতে সাহস করে ঢুকলাম ভেতরে। ভেতরে যে দৃশ্য দেখলাম তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না আমরা। তিনটা কঙ্কালের অবয়ব নড়াচাড়া করছে ল্যাবে! ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে একটা অবয়ব এগিয়ে আসছে আমাদের দিকে। বিকট চিৎকার দিল মিতুল, সঙ্গে আমিও। তারপর আর কিছু মনে নেই।

জ্ঞান ফিরতেই দেখি পাশাপাশি দুটো বেঞ্চে শুয়ে আছি আমি আর মিতুল। পাশে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের বন্ধুরা। বিজ্ঞান স্যার আর দুজন বড় ভাইকেও দেখলাম। আমাদের বোকা বোকা চেহারা দেখে স্যার বললেন, ভয়ের কিছু নেই। ওই অবয়ব তিনটি ছিল আমাদের বিজ্ঞান শিক্ষক ও দুজন বড় ভাই। ল্যাবের ভেতর একটা গবেষণা করছিলেন তাঁরা। সেই গবেষণার রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণেই পুরো কক্ষে এত ধোঁয়া তৈরি হয়েছিল।

হতভম্ব হয়ে পরস্পরের দিকে তাকালাম আমি আর মিতুল। আমি নিশ্চিত বল খুঁজতে আবার ল্যাবে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই ওর। আমার তো নেই-ই।