দুই দিনের পর্যটক

অলংকরণ: রাকিব রাজ্জাক

একদিন হঠাৎ আমাদের বাসায় এক কুকুরছানা আসে। আমরা কেউই ওর বিষয়ে জানতাম না। বাসা ছিল লোকজন আর কোলাহলপূর্ণ। আমাদের বাসায় তিনটি বেডরুম। আমি যে রুমটায় থাকি, সেটা ছিল একদম কোনায়। সেদিন ওই রুমের লাইটটি অফ করা ছিল। আমার বড় আপু কোনো এক কাজে রুমটিতে ঢুকেই বিকট শব্দে চিৎকার দেয়। দ্রুত সেখানে গেলাম আমরা। আপুর কথা অনুযায়ী দরজার পাশ থেকে দৌড়ে পালিয়েছে কিছু একটা। খোঁজাখুঁজি শুরু করলাম আমরা। অবশেষে পাওয়া গেল ছোট্ট কুকুরছানাটা। মায়াবী চোখ, তুলতুলে শরীর, সপ্তাহখানেকের বাচ্চা হবে ওটা। আমরা আবার সবাই পশুপাখি ভালোবাসি। আমার খুবই মায়া হলো ছোট্ট ছানাটির জন্য। আমি আর আপু বাবাকে খুব অনুরোধ করলাম। কিন্তু বাদ সাধল ছোট ভাইয়ের অ্যালার্জি। পশম জাতীয় কোনো প্রাণি বাসায় রাখা যাবে না। দুঃখী মনে দরজাটা আটকাতে হলো। বাইরে থেকে অনেক রাত পর্যন্ত শোনা গেল ছোট্ট ছানাটির ডাক। তারপর একসময় ঘুমিয়ে গেলাম। সকালবেলা উঠে জানতে পারলাম দুর্ঘটনায় মারা গেছে ছানাটি। কথাটা শোনার পর খুবই খারাপ লাগছিল। বারবার ওর ডাকাডাকির কথা মনে পড়ছিল। ছানাটি এসেছিল এক পর্যটক হিসেবে। হঠাৎ এল, ঘুরেফিরে আবার চলে গেল সবাইকে ছেড়ে। পরে তো বাবা রাজি হয়ে গিয়েছিল ওকে রাখতে। কিন্তু তার আগেই ও চলে গেল।