পরীর নাম মেঘবতী

আমার ষষ্ঠ জন্মদিনের কথা। সবার উপহারের অপেক্ষায় উদ্‌গ্রীব আমি। অবশেষে খালামণির কাছ থেকে পেলাম জীবনের সেরা উপহার—একটা গল্পের বই। সেটাই ছিল আমার প্রথম গল্পের বই। বইটার নামপরীর মেয়ে মেঘবতী, হুমায়ূন আহমেদের লেখা। বই পেয়ে আমি আগ্রহী হই পড়ার জন্য। ভালোভাবে পড়তে শিখেছি খুব বেশি দিন হয়নি তখন। তবু পড়তে শুরু করি বইটা। বইয়ের নাবিলের সঙ্গে মিল খুঁজে পাই নিজের। এশার নাকিকান্নার সঙ্গেও নিজের মিল দেখে অবাক হয়েছিলাম, লজ্জাও লাগছিল। আসলেপরীর মেয়ে মেঘবতী পড়ে আমি ছুটে গিয়েছিলাম অন্য এক জগতে। যে জগৎ থেকে এখনো ফিরে আসতে পারিনি। জোছনা রাতে পরিদের নাচ-গান, মজা করার কথা পড়ে বিস্মিত হয়েছিলাম আমি। কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি পরির মেয়ে মেঘবতীর অপেক্ষায়। কখন আসবে মেঘবতী, কখন দেখতে পাব তাকে। এখন আমার ষোলো বছর বয়স। কিন্তু এখনো অপেক্ষায় আছি মেঘবতীর। আমার পড়া প্রথম বইটি আমাকে এনে দিয়েছিল অপূর্ব অনুভূতি, নেশা। যে নেশার টানে আমি অনেক গল্পের বই পড়েছি। কিন্তু প্রথম গল্পের বইয়ের মজাটা সত্যিই আলাদা। এই বই এখনো আমার পড়া সবচেয়ে সুন্দর গল্পের মধ্যে একটি। পরীর মেয়ে মেঘবতী বইটি আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছি এখনো, রাখব সারা জীবন।