প্রতীক্ষার অবসান

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সকালের মিষ্টি রোদে আবার ব্যাগ কাঁধে নিজের প্রিয় প্রাঙ্গণে গেলাম। চেনা আঙিনার অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে দেড় বছরে। যুক্ত হয়েছে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি ও বাড়তি সতর্কতা। সময়ের সঙ্গে বদলেছে আমার পরিচয়, বদলেছে স্কুলড্রেস। প্রিয় প্রাঙ্গণে আমি এখন কলেজের শিক্ষার্থী।

কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে অনলাইন ক্লাসের সুবাদে পরিচিত হলেও নিজের ক্লাসরুম ছিল অচেনা। তাই ১০ বছরের চেনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঢোকার সময় ঠিক স্কুলের প্রথম দিনের মতোই অনুভূতি টের পাচ্ছিলাম। ব্যানার ও বেলুন দিয়ে সাজানো গেটে হাত জীবাণুমুক্ত করে তাপমাত্রা মাপার পর যখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাসরুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন নিজেকে কলেজে ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থী বলেই মনে হচ্ছিল।

প্রতিষ্ঠানের চিরায়ত নিয়ম মেনে নিজ নিজ ক্লাসরুমে কোরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় সংগীতের পর শুরু হয় কলেজ জীবনের প্রথম অফলাইন ক্লাস। নির্ধারিত দুটি ক্লাস শেষে ছুটি হয়ে যায় দ্রুত। প্রতি বেঞ্চে একজন করে বসার নিয়ম থাকায় প্রতিটি সেকশন দুই ভাগ করা হয়েছে। তাই ছুটির পর একই সেকশনের দুই বন্ধু বাড়ি ফিরেছে একই বিষয়ের ভিন্ন দুই শিক্ষকের পড়া নিয়ে!

প্রথম দিন সময়স্বল্পতার জন্য সব বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়নি। তা ছাড়া শিফটিংয়ের জন্য অনেকের ক্লাস ছিল ভিন্ন সময়ে, অসুস্থতার জন্য অনেকে ছিল অনুপস্থিত।

১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের ক্লাস শেষে মুখের মাস্ক ঠিকঠাক আছে কি না, দেখে যখন বের হচ্ছিলাম, তখন গেটের সামনে চিরচেনা হইচই শুনে হঠাৎ মনে হলো, তবে কি আমরা সত্যি অফলাইন জীবন ফিরে পেলাম?

লেখক: দ্বাদশ শ্রেণি, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা