প্রিয় বিকেল, প্রিয় অবসর

অলংকরণ: সাদমান মুন্তাসির

গল্পের বই কিংবা ছবি আঁকার খাতার বাইরে জানালার পাশে সোফার হাতলে বসে থাকা। চমৎকার ঝিরিঝিরি বাতাস। এপ্রিলের মাঝের দিকে কাছেরই ওই কৃষ্ণচূড়ার ফুটে থাকা রক্তলাল ফুল। বাতাসে দুলতে থাকা দূরের বিরাট লম্বা-চওড়া রেইনট্রিগাছগুলোর ছোট ছোট পাতা। আশপাশের নারকেলগাছগুলো যেন চারদিকে পাখা ছড়িয়ে উপভোগ করছে বয়ে যাওয়া বাতাস। নীল আকাশে দোয়েল–চড়ুইদের ওড়াউড়ি, ঝাঁক বেঁধে বকদের ঘরে ফিরে যাওয়া। কী অদ্ভুত লাগে জানালার গ্রিলের ফাঁক দিয়ে ভুল করে ঢুকে পড়া দোয়েল-চড়ুই কিংবা টুনটুনি পাখিটাকে। পাশের বাড়ির মেহগনিগাছটি থেকে মাঝেমধ্যেই উঁকি দেয় একটা কাঠঠোকরা। একটা দৃশ্য খুব মনে পড়ে, ওই বড় রেইনট্রিগাছটি থেকে প্রায়ই লাফ দিয়ে পাশের বাড়ির ছাদে আসে একটা হনুমান। বসে বসে খায় ছাদের পেঁপেগাছের পাতা। ছাদটায় প্রায়ই ম্যাও ম্যাও করে ঝগড়ায় মাতে বিড়ালগুলো। দূরের সেই বাড়ি থেকে সাদা কবুতরগুলোর ক্রমাগত চক্কর আমাদের বাড়ির ওপর। বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি শেষের হিমেল হাওয়ায় যেন আরও সুন্দর হয়ে ওঠে দৃশ্যগুলো। গম্ভীর কালো মেঘের গুড়গুড় শব্দ আর ঠান্ডা ঝোড়ো হাওয়ায় কৃষ্ণচূড়া আর তার ফুলগুলো হয়ে ওঠে আরও অপরূপ। যখন বসন্ত আসে, এই বিকেলেই তখন কানে আসে কোকিলের ডাক। এই তো প্রিয় সময়, ব্যস্ততাকে ভুলে থাকার সময়, সময়টা প্রিয় একাকিত্বকে উপভোগ করারও।

লেখক: পঞ্চম শ্রেণি, করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা