বিড়াল

অলংকরণ: রাকিব রাজ্জাক

আমার মামার বাড়িতে একটা বিড়াল আছে। কুচকুচে কালো তো, তাই ওর নাম কালু। বিড়াল খুবই অপছন্দ মামার। মামি আবার তার উল্টো, বিড়াল খুবই পছন্দ করেন। তাই কালু এখনো টিকে আছে বাড়িতে। গ্রীষ্মকালের ছুটিতে সেবার মামাবাড়িতে গিয়েছি। দেখি, প্রায়ই মামা–মামির মধ্যে বিড়াল নিয়ে ঝগড়া বেধেই থাকে। অথচ কালুও শান্তিতেই আছে।

একরাতে হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙে গেল। খাবার ঘরে এসে দেখি টেবিলে বসে মাছ দিয়ে ভাত খাচ্ছেন মামা। হঠাৎ রান্নাঘর থেকে থালা–বাটির আওয়াজ পেলাম। হয়তো শুনতে পাননি মামা। এমনকি আমি যে তাঁর কাছেই এসেছি, এটাও হয়তো বুঝতে পারেননি।

আস্তে আস্তে রান্নাঘরে গেলাম। দেখি কড়াই থেকে মাছ তুলে এনে খাচ্ছে কালু। হয়তো আজ রাতে মামি কালুকে খেতে দিতে ভুলে গেছেন। এই দৃশ্য দেখে দ্রুত সবকিছু ঠিক করে কালুকে খেতে দিয়ে ঘুমাতে গেলাম আমি।

সকালে ঘুম থেকে উঠে ড্রয়িং রুমে গিয়েই আমার চোখ ছানাবড়া। মামার কোলে আরামে বসে আছে কালু। মামা কালুর মাথায় হাত বোলাচ্ছে।

মামা! তুমি না বিড়াল খুব অপছন্দ করো?

হ্যাঁ। তবে কাল রাতে একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম। এখন আমার চোখ খুলে গেছে।

কী স্বপ্ন?

কাল রাতে দেখলাম আমি বিড়াল হয়ে গেছি। মানে আমি কালু হয়ে গেছি। দেখলাম তোর মামা...টেবিলে বসে ভাত খাচ্ছে। কিন্তু আমি তো বিড়াল। খুব খিদে পেয়েছিল। তাই কড়াই থেকে মাছ খাচ্ছিলাম, তখন তুই এসে সব ঠিক করে আমাকে খেতে দিলি। সকালে যখন চোখ খুললাম, তখন আমি বিছানায়। তখন বুঝতে পারলাম বিড়ালদের জীবন কী কঠিন!

মামার কথা শুনে মাথা ঘুরে গেল আমার! গত রাতে আমি যেটা দেখলাম, সেটা তাহলে কী?