লভার্নের খুব বিখ্যাত একটা বই আছে—বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ। ডক্টর স্যামুয়েল ফার্গুসন কীভাবে সঙ্গীদের নিয়ে বেলুনে চড়ে ঘুরে বেড়ালেন, করলেন শ্বাসরুদ্ধকর সব অ্যাডভেঞ্চার! সেই গল্প আমি এখন বলব না, তোমরা নিশ্চয়ই পড়েছ। আর যারা পড়োনি, পড়ে ফেলো আজই।
তবে আমিও বেলুনের কথাই বলব। রংবেরঙের বেলুনের বিশাল এক উৎসব। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের আলবাকার্কি শহরে প্রতিবছর আয়োজিত হয় ক্যানন আলবাকার্কি আন্তর্জাতিক বেলুন ফিয়েস্তা। এবার আমিও গিয়েছিলাম এই উৎসবে।
আলবাকার্কি আন্তর্জাতিক বেলুন ফিয়েস্তা শিশু–কিশোরদের জন্য চমৎকার এক উৎসব। প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে আকাশে টুকরো টুকরো মেঘের মতো নানা রঙের বেলুনে রঙিন হয়ে ওঠে আলবাকার্কি শহরের আকাশ। বাবা–মায়ের হাত ধরে শিশু–কিশোরেরা দেখতে আসে বেলুনভর্তি রঙিন আকাশ। বেলুনে চড়ে ভেসে বেড়ায় আকাশে।
চার দশকের বেশি সময় ধরে অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহটিতে আলবাকার্কি হয়ে ওঠে ভাসমান উৎসবের নগরী।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আলবাকার্কিতে পাড়ি জমায় হাজার হাজার মানুষ। ১৯৭২ সালে মাত্র ১৩টি বেলুন নিয়ে শুরু হয়েছিল এই উৎসব। এখন ক্যানন আলবাকার্কি আন্তর্জাতিক বেলুন ফিয়েস্তা বিশ্বের বৃহত্তম বেলুন উত্সবে পরিণত হয়েছে। এবার ৪৭তম বেলুন ফিয়েস্তায় ছিল ৯০০টির বেশি বেলুন, ১ হাজার ২০০ চালক আর ১০ লাখের বেশি দর্শক। বেলুন উৎসবের মাঠের আকার ৭৮ একর, যা প্রায় ৫৪টি ফুটবল মাঠের সমান।
পাহাড়ের গঠন এবং বাতাসের বৈশিষ্ট্যের কারণে আলবাকার্কিকে বেলুন ওড়ানোর আদর্শ জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানকার আবহাওয়ার ধরন অনুযায়ী বেলুন পাইলটরা বিভিন্ন উচ্চতায় বাতাসের সঙ্গে বেলুনের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এমনকি মূল গতিপথ বজায় রেখে পেছনে যেতে সক্ষম হন তাঁরা।
বেলুন ফিয়েস্তা কেবল বেলুন এবং দর্শকের সংখ্যাতেই বৃদ্ধি পেয়েছে তা নয়, পাশাপাশি অন্যান্য আয়োজনেও ছাড়িয়ে গেছে এর জনপ্রিয়তা। নান্দনিক ফায়ারওয়ার্কসের পাশাপাশি স্কইডাইভ, লাইভ কনসার্ট ও বেলুন প্রজ্বালন এ উত্সবে যুক্ত করেছে বাড়তি আকর্ষণ।