যাত্রা শুরু করল কিশোর আলো ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব

পড়ালেখা করছিলেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে, হঠাত্ মাথায় খেয়াল চাপল ফটোগ্রাফির। ক্যামেরা কিনে শুরু করলেন ছবি তোলা। খুব একটা গুরুত্ব দেননি শুরুতে, কিন্তু যত দিন পেরোল, ততই বাড়তে লাগল ফটোগ্রাফির প্রতি টানটা। টানটা  এতই বেশি ছিল যে পড়াশোনা অসম্পূর্ণ রেখে পেশা হিসেবে বেছে নিলেন ছবি তোলাকে। আগ্রহ, ভালোবাসা, ত্যাগ, অধ্যবসায়কে সঙ্গী করে অনেকটা সময় আর পথ পাড়ি দিয়ে আজ তিনি মালয়েশিয়ার অন্যতম সেরা ‘ছবি তুলিয়ে’, নাম জেফ ভুন। অন্যদিকে বাংলাদেশের  চলচ্চিত্র পরিচালক রেদওয়ান রনির গল্পটা এর ঠিক উল্টো। সিনেমার প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেন ছাত্রাবস্থা থেকেই, কিন্তু দেশে তখনকার দিনে সিনেমা-সম্পর্কিত পড়ার বিষয় না থাকায় ভর্তি হন কম্পিউটার সায়েন্সে। পড়াও অসম্পূর্ণ রাখেননি, সাফল্যের সঙ্গেই পড়ালেখা শেষ করে ক্যারিয়ার গড়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাণে। দেশের আরেকজন  আলোকচিত্রী প্রীত রেজার গল্পটাও তাঁদেরই মতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় বিভিন্ন উত্সবের ছবি তুলে দিতেন অল্প টাকার বিনিময়ে। তারপর পার হতে হয়েছে অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝাময় পথ। কিন্তু সবার গল্পেই একটা বিষয় খুব মিলে যায়, তাঁরা কেউই নিজেদের জীবনের লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে পারিপার্শ্বিক কিছুর সঙ্গেই আপস করেননি।

গত ৩০ জুলাই কিআর সভাকক্ষে এই কথাগুলোই মুগ্ধ হয়ে শুনছিল একদল কিশোর। সেখানে চলছিল কিশোর আলো ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনলাইনে আবেদনের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচিত ছেলেমেয়েদের সাক্ষাত্কার গ্রহণ শেষে ৭৮ জনকে সদস্য হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। তাদের নিয়েই ছিল ক্লাবটির উদ্বোধনী আয়োজন। ফটোগ্রাফি, সিনেমাটোগ্রাফি, ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিকস ডিজাইন—ক্লাবটিতে সদস্য হিসেবে নেওয়া হয়েছে এই চার বিভাগে। তাই অনুষ্ঠানে বক্তা এবং অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন হংকংয়ের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী অ্যালিসন চ্যান, প্রথম আলোর প্রধান আলোকচিত্রী জিয়া ইসলাম, উপপ্রধান আলোকচিত্রী কবির হোসেন, চিত্রসাংবাদিক সুমন ইউসুফ, খালেদ সরকার ও প্রথম আলোর গ্রাফিক ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম। আর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কিআ সম্পাদক আনিসুল হক তো ছিলেনই। স্বভাবসুলভ হাস্যোজ্জ্ব্বল ভঙ্গিতে ক্লাবের সদস্যদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। আগস্ট সংখ্যার কিআ নিয়ে বানাতে হবে প্রোমো ভিডিও। উপস্থিত সদস্যরা দেরি করেনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে। ক্লাবের প্রথম সভাতেই পাঁচটি দলে ভাগ হয়ে তারা শুরু করে দেয় গল্পকে চলমান ফ্রেমে বাঁধার লড়াই। মাত্র তিন দিনেই তৈরি হয় পাঁচটি ভিডিও। দর্শক আর বিচারকদের রায়ে বিজয়ী হয় তার মধ্যে দুটি। আনিসুল হকের কাছ থেকে শীঘ্রই পুরস্কার পেতে যাচ্ছে ভিডিও দুটির নির্মাতারা।

ভিডিও তৈরির পাশাপাশি নিয়মিত ফটোওয়াক, ফটো টক আর ওয়ার্কশপ করছে ক্লাবের সদস্যরা।

লেখা : হাসানুল ফেরদৌস

ছবি: শেখ মো. আশফাক