রাজা এবং শিল্পীর গল্প

কিশোর আলোর ডিসেম্বর সংখ্যার প্রচ্ছদ
প্রচ্ছদ: মাশিয়াত আহমেদ, কেজি টু, সিদ্দিকি’স ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা

এক দেশে ছিলেন এক রাজা। তিনি ছিলেন খুবই দক্ষ, দয়ালু, প্রজাবৎসল এবং বুদ্ধিমান। কিন্তু তার শারীরিক প্রতিবন্ধিতা ছিল। তার ছিল একটা চোখ, আর একটিমাত্র পা।

একদিন রাজ্যের সেরা শিল্পী এসে বললেন, ‘মহারাজ, আমি আপনার ছবি আঁকতে চাই। তাতে আমি আপনাকে আঁকব খুব সুন্দর করে। নিখুঁত করে।’ রাজা বললেন, ‘আপনি আমার ছবি যদি নিখুঁত আঁকেন, তাহলে তা সুন্দর হবে না। আর যদি সুন্দর আঁকেন, তা বাস্তব হবে না।’

শিল্পী আঁকলেন। সবাই মুগ্ধ হলো। রাজাও মুগ্ধ হলেন। শিল্পী রাজাকে এঁকেছেন ঘোড়ার পিঠে, একপাশ থেকে, তার একটা পা আর একটা চোখ দেখা যাচ্ছে, মুখের অন্য পাশে আরেকটা চোখ আছে কি না, কাউকে ভাবতে হচ্ছে না, ঘোড়ার ওই পাশে রাজার আরেকটা পা আছে কি না, তা নিয়েও কোনো দর্শক চিন্তা করবেন না।

রাজা বললেন, ‘হ্যাঁ, সত্যতা রক্ষা করেও সৌন্দর্য বর্ণনা করা যায়।’

তোমরা যখন কারও জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাবে, কাউকে স্মরণ করবে, বিদায় জানাবে, সেই দিন শুধু সত্যিকারের প্রশংসাগুলো করবে। মিথ্যা না বলে, সত্যিকারের প্রশংসা করা যায়। কারও বিশেষ দিনে বা বিশেষ উপলক্ষে দুটো প্রশংসা করার পর ‘যদি’ বা ‘কিন্তু’ বলবে না। যদি বলো, বন্ধু আজ তোমার জন্মদিন, তুমি আমাদের বেস্ট ফ্রেন্ড, তবে তোমার নাকটা একটু বোঁচা। এই ‘তবে’র দরকার ছিল না। কথাটা সত্য হলেও ভালো কথা হলো না। তাতে তোমার মহত্ত্ব প্রকাশিত হলো না, আবার বন্ধুর নাকটা খাড়াও হলো না। বরং তোমার মনের নিচুতাই তা প্রমাণ করল। বন্ধুর জন্মদিনটাও তুমি মাটি করে দিলে।

সত্যিকারের উৎসাহব্যঞ্জক কথাই আসলে বেশি দরকার।