লুঙ্গিকাহিনি

অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা

আমি রাকিব, ভার্সিটির সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। ভার্সিটির পাশে একটি হোস্টেলে বন্ধুদের নিয়ে থাকি। বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে দিনকাল অনেক সুখেই কাটছিল, যেন খাঁচাছাড়া পাখি! আমি সোশ্যাল মিডিয়ার ভক্ত। প্রতিদিন বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া চালানো যেন অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

ঠিক এ রকম একটি দিনে আমি ফেসবুক স্ক্রল করছিলাম। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে আমার বন্ধু মাহিনের একটি পোস্ট চোখে পড়ল, যেখানে তাকেসহ আরও চার-পাঁচজনকে একসঙ্গে লুঙ্গি পরে সেলফি তুলতে দেখলাম।  আমি লুঙ্গি পরি না। তবে পোস্টটি দেখার পর লুঙ্গি পরার ইচ্ছা মনের মধ্যে জন্ম নিল। যেই ভাবা সেই কাজ। সন্ধ্যার পর বেরিয়ে গেলাম লুঙ্গি কিনতে। প্রায় আধঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর একটি লুঙ্গি পছন্দ হলো।

পরদিন দুপুরে জাঁকজমকভাবে লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরলাম। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে এ নিয়ে মহা হাসাহাসি হলো। সবকিছু শেষে রাতে ঘুমানোর সময় লুঙ্গি নিয়ে একটু অসুবিধা হলেও মানিয়ে নিলাম। সমস্যাটা শুরু হলো এরপরই। মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। চারদিকে সম্পূর্ণ অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি। ঘুমের কারণে মনে হলো কেউ যেন আমাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছে। আমি চিৎকার করে উঠে বসলাম। আমার চিৎকার শুনে বাকি বন্ধুরাও লাফিয়ে উঠল। তখন বুঝলাম, কেউ আমাকে ঢেকে দেয়নি, বরং ফ্যানের বাতাসে লুঙ্গি আমার মাথার ওপরে উঠে এসেছে। এটা দেখে তো আমার বন্ধুরা হেসেই পাগল! ভাগ্য ভালো ছিল যে আমি লুঙ্গির নিচে থ্রি কোয়ার্টার পরে ছিলাম। প্রথমে লজ্জিত হলেও বন্ধুদের হাসির ধরন দেখে আমিও হাসি আটকে রাখতে পারলাম না।

লেখক: অষ্টম শ্রেণি, মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা