‘সব পড়ো, কিন্তু তার সঙ্গে হৃদয়টাকেও একটু রেখো’

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
ফাইল ছবি

সে সময় সবে এক্স-রে মেশিন আবিষ্কৃত হয়েছে। সেটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে লন্ডনের হাইড পার্কে। সেখানে টাঙানো হয়েছে সাদা পর্দা। সেই পর্দার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছেন একজন লোক। এমন সময় ওই লোকটার পেছন থেকে তার ওপর এক্স-রে রশ্মি ফেলা হলো। সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল লোকটা আর নেই। সে জায়গায় কঙ্কাল দাঁড়িয়ে আছে। সেই কঙ্কাল ঘুরছে, আনন্দ পাচ্ছে, দুঃখ পাচ্ছে! কী আশ্চর্য! সেখানে উপস্থিত একজন ম্যাজিস্ট্রেট চিৎকার করে উঠলেন, লোকটাকে দেখা যাচ্ছে না! শুধু কঙ্কালটাকে দেখা যাচ্ছে! পাশে থাকা একজন প্রবীণ চীনা তাঁকে বললেন, মাই বয়! লোকটার কঙ্কালটা দেখা যাচ্ছে, কিন্তু লোকটার হৃদয়টা তো দেখা যাচ্ছে না।

বর্তমান পৃথিবীতে বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সেই কঙ্কালটাকে আমরা খুব সুন্দরভাবে পেয়েছি। সে কঙ্কাল সব করে। কিন্তু সে তো কঙ্কাল। হৃদয়টা তো আমরা হারিয়ে ফেলেছি। পৃথিবীর সামনে যদি মানুষের কিছু স্বপ্ন বা লক্ষ্য থাকে, সেটা হবে সেই হৃদয়টাকে ফিরিয়ে আনা। এমন একটা ‘রে’ বানানো, যেটা দিয়ে কঙ্কালটাকেও দেখা যাবে, আবার হৃদয়ের অনুভূতিগুলোও থেকে যাবে। তোমরা বিজ্ঞান পড়ো, দর্শন পড়ো, সব পড়ো, কিন্তু তার সঙ্গে হৃদয়টাকেও একটু রেখো।

বড় হয়ে হৃদয়টাকে রাখার এ অনুরোধ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় কিশোর আলোর (কিআ) সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ফেসবুক লাইভে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এই গুণী ব্যক্তিত্ব। ‘বড় হয়ে আমি হব’ শিরোনামে এ আয়োজন সঞ্চালনা করেন কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের সঙ্গে ছিল কিশোর আলোর পাঁচজন স্বেচ্ছাসেবক। নিজেদের স্বপ্নের কথা বলার পাশাপাশি তারা জানায় কিশোর আলো নিয়ে অনুভূতি, প্রিয় লেখক ও প্রিয় বইয়ের কথাও।

কিশোর আলো সম্পাদক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে কিশোর আলোর সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সব আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে অনলাইনে, সীমিত আকারে। গণিত, বানান, ভাষা, ক্যারিয়ারসহ বিভিন্ন সৃজনশীল বিষয় নিয়ে গুণীজনদের সঙ্গে কর্মশালা ও আড্ডার আয়োজন করা হবে মাসজুড়ে। সেই সঙ্গে থাকবে দারুণ সব প্রতিযোগিতাও। তিনি বলেন, ‘কিআর জন্মদিনে আমরা অনলাইনে এবং কিআর পাতায় এমন অনেক আয়োজন করব, যেসব তোমাদের জীবনকে সুন্দর করতে সাহায্য করবে।’

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের লাইভ ও কিআর পরবর্তী আয়োজনগুলো সম্পর্কে জানা যাবে কিশোর আলোর ফেসবুক পাতায় (www.fb.com/kishor.alo)।