সুপারহিরোর কাছে চিঠি

অলংকরণ: সাদমান মুন্তাসির

বাবু,

জীবনে অনেক সুপারহিরো দেখেছি আমি। সুপারম্যান, স্পাইডারম্যান, ব্যাটম্যান আরও কত কী! কিন্তু আমার দেখা সত্যিকার সুপারহিরো তুই, ভাই। তুইও ছোটবেলা থেকেই আমার মতো ক্রিকেট–পাগলা। পার্থক্য এই, আমি ক্রিকেটের ‘ক’ও খেলতে পারি না। আর তুই একেবারে অলরাউন্ডার। আমরা দুজন যেন পথের পাঁচালীর অপু আর দুর্গা। তুই অপুর মতো লক্ষ্মী ছেলে তো দুর্গার মতো ডানপিটে মেয়ে আমি। খেলার মাঠে তুই চার–ছক্কার ব্যাটিং আর দুর্দান্ত পেস বোলিংয়ে উড়িয়ে দিতি বিপক্ষ দলকে, মনে আছে রে? ম্যান অব দ্য ম্যাচের মেডেল গলায় ঝুলিয়ে ঘরে ঢুকতি সুপারহিরোর মতো। তবে সুপারহিরো নয়, তোর ছোট্ট ভুঁড়িটা দেখে নাম দিয়েছিলাম ‘ভুঁড়িয়াল ভাই’। এই নামে তোকে ডাকলেই বলতি ‘আপুনি! ভালো হবে না কিন্তু বলে দিলাম!’ তারপর হেসেই কুটিকুটি। খেলার সময় বিপক্ষ দলকে কুপোকাত করে দিত যে ছেলে, তাকে জিততে দিল না কেবল একজন—মরণঘাতী ব্রেইন ক্যানসার। মাত্র ১০ বছরে থামিয়ে দিল তোর জীবনের ইনিংস। জীবনের বাউন্ডারি লাইনের ওপারে নিয়ে চলে গেল তোকে। কিন্তু তবু হার মানিসনি তুই। জীবনের শেষ ওভারের শেষ বল পর্যন্ত সব যন্ত্রণা তুই সহ্য করেছিস হাসিমুখে। সত্যিই তুই সুপারহিরো, যে কখনোই হার মানে না। কথা দিচ্ছি, তোর মতো হব আমিও, কোনো দিন হার মানব না। তুই ভালো থাকিস সোনাভাই আমার। মনে রাখিস তোর পাগল আপুনিকে।

ইতি, তোর পাগল আপুনি
তুবা তাসবিতা