সেরা অভিজ্ঞতা

অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা

রিকশাটা এসে থামল স্কুলের লৌহফটকের সামনে। স্কুলের দরজা হাট করে খোলা। প্রচণ্ড উত্তেজনায় আমার হাত–পা কাঁপছে। রিকশা থেকে নেমে মূল দরজার কাছে এগিয়ে গেলাম। দারোয়ান চাচা হাতে স্যানিটাইজার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি হাত স্যানিটাইজ করে ভেতরে ঢুকলাম। ঢুকেই দেখতে পেলাম বুশরা, স্নেহা আর লামিয়াকে। সবাই মাস্ক পরে আছে। খুব ইচ্ছা করছিল দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে। কিন্তু করোনাকালীন সতর্কতার জন্য তিন ফুট দূর থেকেই সবাই হাত মুঠো করে একজন আরেকজনের হাতে টোকা দিলাম। স্কুলের মাঠে দড়ি দিয়ে গোল করে রাস্তা পৃথক করা হয়েছে, যেন কেউ যেখানে–সেখানে ঘোরাফেরা করতে না পারে। আমি খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে চারতলা স্কুল ভবন আর মাঠটা দেখলাম। আকাশটা মেঘলা। বাতাসে তিরতির করে নড়ছে গাছের পাতা। চোখটা ছলছল করে উঠল। ৫৪৪ দিন পরে স্কুলটি দেখলাম। আমার মুখে ফুটে উঠল হাসি আর চোখে জল। কী অসাধারণ অনুভূতি! সিঁড়ির সামনে সব শিক্ষক দাঁড়িয়ে আমাদের স্বাগত জানালেন। মনটা খুশিতে ভরে উঠল। ক্লাসরুমে ঢুকে পড়লাম। আনন্দে যেন সব বন্ধু উন্মাদ হয়ে উঠেছিলাম। মুখর হয়ে উঠেছিল পুরো স্কুল। শ্রেণিকক্ষের প্রতিটা জিনিসকে খুব মিস করেছি। শিক্ষকদের লেকচার, হোয়াইট বোর্ড, স্কুল ক্যাম্পাস—সবকিছুই মিস করেছি। দীর্ঘদিন পরে শিক্ষকদের ক্লাস পেয়ে আমরা যেন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। ছুটির ঘণ্টা কানে আসতেই পুরোনো স্মৃতি ভেসে উঠল। এককথায় বলতে পারি, এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতাগুলোর একটি।

লেখক: নবম শ্রেণি, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বুয়েট ক্যাম্পাস, ঢাকা