স্কুলে যাওয়া

অলংকরণ: রাকিব রাজ্জাক

প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিনটি সবার জীবনেই খুব রোমাঞ্চকর। প্রথম স্কুল, ব্যাগ, বই-খাতা, পেনসিল—সব মিলিয়ে একটা অন্য রকম অনুভূতি, যা আসলে ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। প্রথম স্কুলে যাওয়ার স্মৃতিটা আজও আমার কাছে জ্বলজ্বলে। এখন দেখলে অবাকই লাগে, প্রথম দিন স্কুলে গেলে বাচ্চাগুলো কেমন কান্নাকাটি করে। অথচ আমি মোটেও কাঁদিনি। অনেক সাহসী ছিলাম যে! যেদিন প্রথম স্কুলে যাব, তার আগের দিন থেকে মনে উত্তেজনা ছিল। তারপর এল সেই দিন! দুরুদুরু বুকে নতুন ব্যাগ, বই-খাতা নিয়ে নতুন স্কুল ড্রেস পরে চললাম আমার নতুন ঠিকানা সৈয়দপুর কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। সবাই প্রথম স্কুলে যায় তাদের মা-বাবার সঙ্গে। আমি গিয়েছিলাম আমার ভাইবোনদের সঙ্গে। ওরা ওই স্কুলেই পড়ত। আমাকে ক্লাসে ঢুকিয়ে দিয়ে চলে গেল ওরা। আমি তো ভয়ে ভয়ে বসে আছি, কারও সঙ্গে কথা বলিনি। নড়াচড়া করতেও ভুলে গিয়েছিলাম যেন। একটু পর ম্যাডাম এলেন। মোটাসোটা, বিরাট বড় (আমার ছোট চোখে তাই মনে হয়েছে)। তবে আমি ভয় পাইনি, যদিও ভয় পাওয়ার কথা ছিল। এরপর থেকে রোজ ভাইবোনদের বহর নিয়ে স্কুলে যাওয়া শুরু করলাম। এখন পর্যন্ত দুটি স্কুল বদলেছি। তবে কখনো ভয় পাইনি। আর পাবও না। আমার স্কুলজীবন নানা রকম হাসি-কান্নার স্মৃতিতে ভরা। কত হূদয়বান বন্ধু পেয়েছি। আর কয়েক বছর পর আমার স্কুলজীবনের অবসান ঘটবে। অনেক মনে পড়বে স্কুলে যাওয়ার মধুর স্মৃতিগুলো। তাই আর কখনো স্কুল কামাই করব না, কারণ এই দিনগুলো চলে গেলে আর কখনো ফিরে পাব না আমার স্কুলজীবন। জীবনের সবচেয়ে মধুর অংশ, অবিচ্ছেদ্য অংশ।