স্কুলের কাছে খোলা চিঠি

প্রিয় ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়,

কী? আমাকে চিনতে পারলে না? আমি জেবা। তোমার স্নেহধন্য গর্বিত এক ছাত্রী, যে কিনা তোমার মস্ত বড় একজন ভক্ত। আর মাত্র দুটো মাস। তারপর ছেড়ে চলে যেতে হবে তোমাকে। আচ্ছা, তুমি কি এই দুরন্ত মেয়েটিকে মনে রাখবে? যে কিনা প্রায়ই ঘুমের বাহানায় ক্লাস মিস দিত? আমি কিন্তু তোমাকে খুব মিস করব। কত মধুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে তোমার সঙ্গে! অ্যাসেম্বলিতে সামনে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া, টিফিন টাইমে ভাগাভাগি করে বন্ধুদের টিফিন খাওয়া, মাঠে দৌড়াদৌড়ি করে কানামাছি খেলা। পরীক্ষার হলে একটু-আধটু দেখাদেখি...,ইশ্! বড় আপার গাছের আম চুরি করে পাড়ার কথা তো কোনো দিন ভুলব না। ফাতেমা আপার আদর, নাসরিন আপার শাসন, নূর সফা স্যারের নৈতিক শিক্ষা, রহিমা আপার ‘অ্যাই মেয়েরা’ আর কাজল স্যারের ‘তোর বাড়ি কই?’ এগুলো কোনো দিন চাইলেও ভোলা সম্ভব নয়। জুবাইদাহ, নাফিসার সঙ্গে বসা, সারা ক্লাস বকর বকর করা, মাঝখানে একে অপরকে ‘ঝাকানাকা বুমবুম’ অর্থাৎ কাতুকুতু দেওয়া...আহ্! কী যে মিস করব এই দিনগুলো। এত তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গেলাম কেন? শখ করে বড় রাখা নখ নাসরিন আপার চোখে পড়বে—এই ভয়ে সিটিয়ে থাকতে হবে না আর কোনো দিন। দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না মাছুমা আপার ক্লাসে বই না আনার অপরাধে। নজরুল স্যারের ‘সবাই চুপ’ কথাটা শুনতে হবে না...দেখলে? দেখতে দেখতে কত কথাই না লিখলাম।

কী করব? বড্ড ভালোবাসি যে তোমাকে। তুমিও আমাদের অনেক ভালোবাসা দিয়েছ। দিয়েছ অনেক অমলিন স্মৃতি, এখন শুধু একটাই অনুরোধ, আমাকে মনে রেখো আর একটু হলেও মিস কোরো।

ইতি
তোমার গুণমুগ্ধ
মিফতাহুল জান্নাত

(কিশোর আলোর অক্টোবর সংখ্যায় প্রকাশিত)