স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রস

ভৌগোলিকভাবে উত্তর ইউরোপের ডেনমার্ক, নরওয়ে ও সুইডেনকে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ বলা হয়। এ ছাড়া ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও ফ্যারো আইল্যান্ডকেও এই অঞ্চলের দেশ ধরা হয়। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান পেনিনসুলাতে অবস্থিত বলে এই দেশগুলোকে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ বলা হয়। এই অঞ্চলের মানুষের রস-রসিকতা ভুবনখ্যাত। খুব কঠিন বিষয়কেও দারুণ রসে রাঙাতে পারে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের মানুষেরা। সেই রসের গল্প আর কিছু নমুনা দেখো এখানে
  • সুইডিশরা বাড়ি রং করার সময় খুব তাড়াতাড়ি রং করতে পারে। এই তাড়াতাড়ির রহস্য কি তা জানো তুমি? আসলে রং শেষ হওয়ার ভয়ে সুইডিশরা নাকি খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি রং করে।

  • একটি দুই আসনের সেসনা ১৫২ মডেলের বিমান সুইডেনের মাঝখানে একটি কবরস্থানের ওপর বিধ্বস্ত হয়। পরদিন সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়, বিমান থেকে উদ্ধারকর্মীরা তিন হাজার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকাজ শেষ হতে হতে এই সংখ্যা আট হাজার ছাড়াবে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

  • এক যুদ্ধের সময় সুইডিশ সাবমেরিন ডুবিয়ে দেওয়ার দারুণ এক বুদ্ধি বের করেছিল রুশরা। সুইডিশ সাবমেরিনের দরজায় নক করলে ভেতর থেকে সুইডিশ ভাষায় ‘কম ইন’ (বাংলায় ভেতরে আসুন) বলে কোনো একজন নাবিক উত্তর দিতেন। আর দ্বিতীয়বার নক করলে নাবিক সাবমেরিনের দরজা খুলে দিতেন।

  • একবার দোকানে এসে এক ক্রেতা দোকানিকে বললেন, ‘আমাকে একটি স্যান্ডউইচ দিন।’ দোকানি চোখ বড় করে উত্তর দেয়, ‘আপনি কি সুইডিশ?’ ক্রেতা অবাক হয়ে উত্তর দেন, ‘আরে, আপনি কীভাবে জানলেন?’ দোকানি উত্তর দেয়, ‘আপনি সুইডিশ না হলে হার্ডওয়্যারের দোকানে এসে স্যান্ডউইচ চাইতেন না।’

  • সুইডেনের অনেক কোমল পানীয়র বোতলের নিচে লেখা থাকে, ‘উল্টো পাশ দিয়ে মুখ খুলুন।’

  • এক কুয়াশাচ্ছন্ন রাতে নরওয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম সমুদ্র এলাকায় সুইডেনের এক যুদ্ধজাহাজকে বেতারবার্তা পাঠানো হয়। বার্তায় বলা হয়, ‘সুইডিশ জাহাজ, ১০ ডিগ্রি পশ্চিমে সরে যাও।’ সুইডিশ জাহাজের ক্যাপ্টেন অনেক রেগে যান, তিনি উল্টো বার্তা পাঠান, ‘যে বার্তা পাঠাচ্ছে, সে যেন ১০ ডিগ্রি পূর্বে সরে যায়।’ কয়েক মিনিটের মধ্যে আবারও বার্তা আসে, ‘সুইডিশ জাহাজ, ১০ ডিগ্রি পশ্চিমে তাড়াতাড়ি সরে যাও।’ এতে সুইডিশ জাহাজের ক্যাপ্টেন আরও রেগে যান, তিনি আবার বার্তা পাঠান, ‘আমি জাহাজ একটুও সরাব না। তোমরা অকাজের নরওয়েজীয় ১০ ডিগ্রি পূর্বে সরাও।’ এক মিনিটের মধ্যে আবার উত্তর আসে, ‘সুইডিশ জাহাজ, জরুরিভাবে ১০ ডিগ্রি পশ্চিমে সরে যাও।’ এবার রাগ নিয়ন্ত্রণ না করে সুইডিশ জাহাজের ক্যাপ্টেন উত্তর দেন, ‘দেখো। আমি সুইডিশ যুদ্ধজাহাজের ক্যাপ্টেন। আমি নরওয়ের কারোরই নির্দেশ শুনব না। আমার জাহাজ ১০ ডিগ্রি কোথাও সরবে না। তোমার যা ইচ্ছে তা-ই করো।’ বার্তা পাঠানোর দুই মিনিটের মধ্যে সুইডিশ জাহাজটি নরওয়ে উপকূলে একটি বাতিঘরের সঙ্গে ধাক্কা খায়। বেতারবার্তা সেই বাতিঘর থেকেই পাঠানো হচ্ছিল।

  • স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের মানুষের কৌতুক বললে তুমি যদি নিজে না হাসো তাহলে তারা ভীষণ রাগ করে।

  • চিঠির ওজন করে পোস্টমাস্টার এক সুইডিশকে বলছেন, ‘চিঠির ওজন তো অনেক বেশি। আপনাকে আরেকটা ডাকটিকিট লাগাতে হবে।’ সুইডিশ ব্যক্তি জবাব দেয়, ‘এতে কি চিঠির ওজন কমে যাবে?’

  • অতি উত্সাহী ফিনিশকে কীভাবে চিনবেন? যখন দেখবেন সে নিজের পায়ের দিকে না তাকিয়ে আপনার পায়ের দিকে তাকাচ্ছে।

  • বইয়ের দোকানে দোকানি এক ছাত্রকে বলছেন, ‘এই বই পড়লে তোমার কাজ অর্ধেক সহজ হয়ে যাবে।’ সুইডিশ সেই ছাত্র সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠে, ‘তাহলে আমাকে দুই কপি দিন।’

  • ‘এখন কটা বাজে?’ এক সুইডিশ আরেক সুইডিশকে জিজ্ঞাসা করে। অন্য সুইডিশ উত্তর দেয়, যত যা-ই বাজুক, এখন সাতটা বাজতেই পারে না। সাতটার সময় আমার বাড়ি থাকার কথা, আর আমি বাড়ি নেই এখন।’

  • স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের মানুষেরা পানি দিয়ে মাছ দারুণভাবে পরিষ্কার করতে পারে।

  • এয়ারপোর্টে এক এয়ারলাইনসের রিসিপশনিস্টকে এক যাত্রী জিজ্ঞেস করছেন, ‘স্টকহোম থেকে প্যারিস যেতে কতক্ষণ লাগবে?’ রিসিপশনিস্ট জানান, ‘এক মিনিট, প্লিজ।’ সুইডিশ যাত্রীর প্রত্যুত্তর, ‘ধন্যবাদ’।

  • এক ফিনিশ (ফিনল্যান্ডের অধিবাসী) তার সুইডিশ বন্ধুর সঙ্গে হোটেলে বাজি ধরে। সুইডিশের মাথায় ১০টি কাচের বোতল ভাঙলে ফিনিশ বন্ধুটি তাকে ২০০ ডলার দেবে। সুইডিশ বন্ধু মানসম্মানের ভয়ে নিজের মাথায় বোতল ভাঙাতে রাজি হয়। এরপর বোতল ভাঙা শুরু হয়। নবম বোতল ভাঙার সময় বেশ দেরি হওয়াতে পরে সুইডিশ তার বন্ধুকে বলে, ‘আরে ১০ নম্বর বোতল কখন ভাঙা হবে?’ ফিনিশ বন্ধু উত্তর দেয়, ‘আরে, আমি এত বোকা নই। ১০ নম্বর বোতল ভাঙলেই তো ২০০ ডলার দিতে হবে।’

  • প্রায় ১৮ বছর আগে এক নরওয়েজীয় এক জাদুঘরে ঘুরতে গিয়েছিল। সেখানে এক গাইড এক তলোয়ার দেখিয়ে তাকে বলে, ‘এটা অনেক পুরোনো এক তলোয়ার, প্রায় দুই হাজার বছরের পুরোনো।’ নরওয়েজীয় পর্যটক রেগে জবাব দেয়, ‘এটা কীভাবে সম্ভব! এখন তো ১৯৯৮ সাল!’

  • সুইডিশরা বিভিন্ন উৎসবে দারুণ একটি খেলা খেলে। একটি ঘরের মধ্যে কেউ একজন লুকানোর পরে সবাই মিলে মনে করার চেষ্টা করে ‘কে আসলে ঘরের মধ্যে!’

  • এক সুইডিশ তার পোষা হাঁসকে কোলে নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল। তখন এক পথচারী জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি এই বানরটিকে কোথায় পেয়েছ?’ সুইডিশ ভদ্রলোক উত্তর দেন, ‘এটা তো হাঁস!’ পথচারী প্রত্যুত্তর দেন, ‘চুপ করো, আমি হাঁসটির সঙ্গে কথা বলছি।’

  • নরওয়ের সেনাপ্রধান: সুইডিশ যুদ্ধজাহাজ কীভাবে ডোবানো যায়?
    নরওয়ের নৌপ্রধান: যুদ্ধজাহাজকে তো তার আগে পানিতে নামতে হবে!

  • স্টকহোম বিমানবন্দরে অবতরণের সময় কন্ট্রোল টাওয়ার একটি ড্যানিশ বিমানকে অবস্থান জানানোর জন্য বার্তা পাঠায়। ড্যানিশ পাইলট খুবই অবাক হন এবং বার্তা পাঠান না। কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে আবারও অবস্থান জানানোর জন্য বার্তা পাঠানো হয়। এবার পাইলট রেগে গিয়ে উত্তর দেন, ‘আমি প্রতিদিনকার মতোই বিমানের সামনে বসে আছি।’

  • এক ড্যানিশ একবার ভয়ানক বিপদে পড়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী ট্রেনে করে আরেক শহর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু ট্রেনটি ৮টা ৪০ মিনিটে নাকি ৪টা ৮০ মিনিটে আসবে তা কিছুতেই মনে করতে পারছিলেন না ড্যানিশ ভদ্রলোকটি।

  • —একজন সুইডিশ আর মশার মধ্যে পার্থক্য কী?
    —মশারা শুধু গ্রীষ্মে বিরক্ত করে।

  • নরওয়ে থেকে ২০ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস সুইডেনের দিকে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় পড়ে। দুর্ঘটনার খবর শুনে বাসের ফিনিশ মালিক খুব কষ্ট পান, ‘বাসে তো ৩০ জনের জায়গা ছিল’ বলে আক্ষেপ করছিলেন তিনি।