স্বপ্ন

অলংকরণ: রাকিব রাজ্জাক

একদিন সকালে দেখি আমি একটা তেলাপোকা হয়ে গিয়েছি। ঠিক তেলাপোকার মতো কতগুলো পা হয়েছে...মানে এখন আমি পুরোপুরি একটা তেলাপোকা। প্রথমে পিলপিল করে পুরো বাসাটা একবার ঘুরলাম। সবকিছুই কেমন যেন বড় বড় লাগছে। আম্মুকে একটা দৈত্যের মতো দেখছি। আম্মু অবশ্য আমাকে এখনো দেখতে পাননি। এভাবে কতক্ষণ হাঁটতে হাঁটতে আমাদের পুরোনো বুকশেলফে একটা তেলাপোকার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। কী অদ্ভুত! আমি একটুও ভয় পাইনি। অন্য সময় হলে চিত্কার করে বাসা কাঁপিয়ে দিতাম। কিন্তু ওই তেলাপোকাটা আমার সঙ্গে কোনো কথা বলেনি। খুব অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু কেন জানি না, আমিও আর আগ বাড়িয়ে কথা বলতে গেলাম না। এতক্ষণ ঘোরাঘুরি করে পেটে খিদে পেয়ে গেল। তাই সোজা ডাইনিং রুমের খাবারের টেবিলে চলে এলাম। কিন্তু সব খাবার ঢাকা। আম্মু আমার জন্য কোনো খাবার রাখেননি! ঠিক তখন আম্মু পায়েসের বাটিটা রাখতে গিয়ে আমাকে দেখে ফেললেন। আর একটা ঝাড়ু নিয়ে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন। আমি ভয়ে একটা গলা ফাটানো চিত্কার দিয়ে বিছানায় উঠে বসে পড়লাম। তারপর পাশে রাখা অ্যালার্মটা বেজে উঠল। ওহ! পুরোটাই তাহলে স্বপ্ন ছিল। সেদিন থেকে আমি বুঝতে পারলাম যে তেলাপোকাদের জীবনটা খুবই কষ্টকর। যেকোনো সময়ে মরে যাওয়ার ভয় থাকে। এরপর থেকে আমি আর কোনো তেলাপোকাকে মারার চেষ্টা করিনি। আর আমার বিছানার পাশে আরেকটা ছোট্ট বিছানা বানিয়েছি। প্রতি রাতে একটা একটা তেলাপোকাকে বেঁধে ওই বিছানায় শুইয়ে দিই, যেন একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারে। কিন্তু বেশ কদিন ধরে আর একটা তেলাপোকাও পাচ্ছি না। একদিন স্বপ্নে দেখলাম ওই সব তেলাপোকা নাকি আমার যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে এ বাসা ছেড়ে চলে গেছে। কিছুই বুঝলাম না। আমি আবার এদের যন্ত্রণা দিলাম কোথায়!

লেখক: শিক্ষার্থী, রাগীব–রাবেয়া হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিশ্বনাথ, সিলেট