ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, স্পেন আর আর্জেন্টিনার পর এবার বাংলাদেশে ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’

‘আম-কাঁঠালের ছুটি’ সিনেমার একটি দৃশ্য

প্রতিবছরের মতো এবছরও স্কুলগুলোতে আম-কাঁঠালের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই ছুটি আবার বাতিলও করা হয়েছে। এ নিয়ে কথার ঝড় উঠেছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছিল লম্বা লম্বা আলোচনা। দিনশেষে ছুটি বাতিলের কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের মন খারাপ হয়েছে।

তবে এই আম-কাঁঠালের ছুটি বাতিল হওয়ার দুঃখ কিছুটা হলেও এবার কমবে। ছুটি না পেলেও, গ্রীষ্মের ছুটির এক গল্প বড় পর্দায় দেখার সুযোগ হচ্ছে। ১৮ আগস্ট, শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’। মোহাম্মদ নূরুজ্জামান পরিচালিত চলচ্চিত্রটি চলছে দেশের পাঁচটি প্রেক্ষাগৃহে।

সিনেমার গল্পটা তোমাদের একটু বলি। শুভর বয়স তোমাদের মতোই। ঢাকাতেই থাকে ও। বারান্দা থেকে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষ দেখে শুভর বেশিরভাগ সময় কাটে। সারাদিন ঘরবন্দী থাকলে এছাড়া আর কীই বা করবে ও বলো? এক গ্রীষ্মের ছুটিতে দাদির সঙ্গে গ্রামে বেড়াতে গেল শুভ। গ্রামে গিয়ে নতুন বন্ধু বানিয়ে ফেলল সে। নতুন এই বন্ধুর নাম মইন্না। কোনো খেলাই মইন্নাকে ছাড়া জমে না। একদিন জোলাভাতি খেলার আয়োজনের আগে হারিয়ে গেল মইন্না। তারপর? গল্পের বাকিটা সিনেমা হলে বসেই না হয় দেখলে, কী বলো?

আরও পড়ুন
গ্রীষ্মের ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে এসে বদলে যায় শুভ, পায় বন্ধুত্ব আর রোমাঞ্চের হাতছানি, আবিষ্কার করে এক নতুন জগৎ।
‘আম-কাঁঠালের ছুটি’ সিনেমার পোস্টার

‘আম-কাঠালের ছুটি’র গল্প লিখেছেন শরীফ উদ্দিন। অভিনয় করেছে জুবায়ের, লিয়ন, আরিফ, তানজিল, হালিমা, ফাতেমাসহ আরও অনেকে। মজার ব্যাপার হলো, এই সিনেমার প্রায় সকল শিশুশিল্পী প্রথমবারের মতো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছে। শিশুদের এই চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে সিনেমেকার।

চারটি আন্তর্জাতিক উৎসব ঘুরে এসে বাংলাদেশে মুক্তি পেল ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয় এই সিনেমার। রাশিয়ার চলচ্চিত্র উৎসবে ঘুরতে গিয়ে ‘আম কাঁঠালের ছুটি’ জিতেছে বিশেষ পুরস্কার। ইউরোপ অঞ্চলটাও বাদ পড়েনি। স্পেনের বার্সালোনা শহরের এক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে এই সিনেমা। সর্বশেষ মেসি-ডি মারিয়াদের দেশ আর্জেন্টিনা ঘুরে এল ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’।

পরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামানকে জিজ্ঞেস করলাম, দর্শক কেন এই ছবি দেখবে? সোজাসাপ্টা উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘এই ছবিতে একটি বিশেষ সময়ের সমন্বিত শৈশবকে উপস্থাপন করা হয়েছে। বড়রা এই ছবি দেখে নিজের শৈশবের স্মৃতি হাতড়াবেন আর ছোটরা দেখবে তাদের চেনা জগতের বাইরেও জীবনের আরেকটা রূপ আছে।’

‘আম-কাঁঠালের ছুটি’ দেখা যাবে ঢাকার তিনটি প্রেক্ষাগৃহে। বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমাস ও কেরানীগঞ্জের লায়ন সিনেমাস-এ। এছাড়া চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন ও নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ-এ চলছে চলচ্চিত্রটি।

গ্রীষ্মের ছুটি বাতিলের দুঃখ কিছুটা কমাতে ছুটির দিনে মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে দেখে আসতে পারো ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’। শুভর সঙ্গে তুমিও হয়তো আবিষ্কার করবে এক নতুন জগৎ।

আরও পড়ুন