বারকোড কী, কেন, কীভাবে
বারকোড হচ্ছে এমন এক পদ্ধতি, যে পদ্ধতিতে একটি যন্ত্র দিয়ে আমরা খুব সহজে কোনো পণ্য সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্য পাই। বারকোড পণ্যের বিভিন্ন জায়গায় থাকতে পারে। এটা দেখতে সাধারণত অনেকটা সাদাকালো দাগ বা নকশার মতো। অনেকের কাছে বারকোডকে একটা হিজিবিজি দাগ বা সাদা কালো লম্বা দাগের মত মনে হতে পারে। তবে বারকোড এখন বিভিন্ন রকমের চেহারায় দেখতে পাওয়া যায়।
বারকোডের কাজ
বারকোড আমাদের বিভিন্ন বস্তু আরও বিশেষ করে বললে পণ্য সম্বন্ধে তথ্য দেয়। এটা স্ক্যান করলে জানা যায় পণ্যটির বিভিন্ন খুঁটিনাটি তথ্য। যেমন, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, এটা কী ধরনের পণ্য এবং এর গুণগত মান ঠিক আছে কিনা সহ নানা তথ্য।
কারা প্রথম বারকোড আবিষ্কার করে
নর্মান জোসেফ উডল্যান্ড ও বার্নাড সিলভার নামের আমেরিকার দুই ইঞ্জিনিয়ার ও প্রযুক্তিবিদ বারকোডের আবিষ্কারক। ১৯৫২ সালে তাঁরা বারকোডের পেটেন্ট লাভ করলেও এই বারকোড কী কাজে লাগবে সেটা বুঝতে লেগে যায় দশ বছর, আর বারকোডকে বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগাতে লেগে যায় আরও ২০ বছর।
১৯৬২ সালে ব্রিটিশ রেল কোম্পানি প্রথম বারকোডের ব্যবহার শুরু করে। তবে বাণিজ্যিকভাবে বারকোডের ব্যবহার শুরু হয় ১৯৭৩ সালে। আইবিএমের এক ইঞ্জিনিয়ার গ্রেগর লওরার প্রথম এমন এক বারকোড ডিজাইন করেন যেটি সারা বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য হয়। এটাকে বলা হয় ইউপিসি বা ইউনিভার্সাল প্রোডাক্ট কোড।
১৯৭৪ সালে আমেরিকার ওহাইও রাজ্যের ট্রয় শহরে অবস্থিত মার্সা’স সুপারমার্কেটে প্রথম বারকোডযুক্ত পণ্য বিক্রি করা হয়। আর এই পণ্যটির নাম ছিল রিগলের জুসি ফ্রুট চুইংগাম।
পৃথিবীর প্রথম বারকোড দেখতে ছিল বুলস আই বা গোলাকৃতির। এখন অবশ্য বেশিরভাগ বারকোড চারকোণার। বারকোডের ভাষা পড়ার জন্য লাগে স্ক্যানার।
স্ক্যানার আবিষ্কার
বারকোডের সঙ্গে আরেকটি আবিষ্কার যুক্ত হয়ে আছে, আর সেটি হলো বারকোড স্ক্যানার। ১৯৬৯ সালে ডেভিড জ্যারেট সুলিভান নামের আমেরিকার এক আবিষ্কারক বারকোড স্ক্যানার আবিষ্কার করেছিলেন।
আগে বারকোডের জন্য বিশেষ স্ক্যানার তৈরি করা হলেও এখন মোবাইল ফোনেও স্ক্যানার পাওয়া যায়। পৃথিবীর প্রথম যে ফোন দিয়ে বারকোড স্ক্যান করা সম্ভব হতো সেটি ছিল নোকিয়ার একটি স্মার্ট-ফোন। নোকিয়ার ৬৬০০ মডেলের ফোনটি সেই সময়কার সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ফোন।
পৃথিবীর প্রথম বারকোড একমাত্রার হলেও এখন পণ্যে টুডি বা দ্বিমাত্রিক বারকোড ও ম্যাট্রিক্স কোডও ব্যবহার করা হয়।