জাপানে ভালুকের হামলায় ৭ জনের মৃত্যু, কেন বাড়ছে আক্রমণ
জাপানে এই বছর বুনো ভালুকের আক্রমণ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত এপ্রিল মাস থেকে এখন পর্যন্ত ভালুকের আক্রমণে সাতজন মানুষ মারা গেছেন। এ মৃত্যুর ঘটনাগুলো মূলত উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং উত্তরের হোক্কাইডো প্রদেশে ঘটেছে। ২০০৬ সাল থেকে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু হওয়ার পর এক বছরে এত মৃত্যুর ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।
সবশেষ ঘটনাটি ঘটেছে ইওয়াতে প্রদেশে। সেখানে ৬০ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি একটি ঝরনা পরিষ্কার করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। সন্দেহ করা হচ্ছে, তিনি ভালুকের আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
ভালুক কেন আক্রমণ করছে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভালুকেরা সাধারণত শীতনিদ্রায় যাওয়ার আগে শরৎকালে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং প্রচুর পরিমাণে খায়। কিন্তু এই বছর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিচ বাদামের ফলন খুব কম হয়েছে। এটাই ভালুকের প্রধান খাদ্য। ফলে ক্ষুধার্ত ভালুকেরা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে বা আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ছে। এ ছাড়া গ্রামাঞ্চলে জনসংখ্যা কমে যাওয়াকেও একটি কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ৭ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আরও প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন। গত বছর এপ্রিল মাস পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫, আহত ৮৫ জন।
সম্প্রতি ইওয়াতে শহরে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধারের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে, তাকে ভালুকই হত্যা করেছে। আরেকটি ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে টোকিওর উত্তরে গুনমা প্রদেশের নুমাটা শহরে। সেখানে প্রায় ৪ দশমিক ৫ ফুট লম্বা একটি পূর্ণবয়স্ক ভালুক একটি সুপারমার্কেটে ঢুকে পড়ে! ভালুকটি এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করলে দুজন ব্যক্তি সামান্য আহত হন। তাঁদের একজন বয়স ৭০ বছর, অন্যজন ৬০ বছর।
সুপারমার্কেটের ম্যানেজার জানান, ভালুকটি যখন ঢোকে, তখন ভেতরে ৩০-৪০ জন ক্রেতা ছিলেন। ভালুকটি বের হওয়ার পথ খুঁজে না পেয়ে আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল।
একই দিনে ইওয়াতে অঞ্চলে একজন কৃষক তাঁর বাড়ির বাইরে একটি বাচ্চাসহ ভালুকের আক্রমণের শিকার হন। ভালুকটি তাকে খামচি দেয় এবং কামড়ে দেয়। এমনকি পর্যটকেরাও রেহাই পাচ্ছেন না। এ মাসের শুরুতে মধ্য জাপানের শিরাকাওয়া-গো গ্রামে একটি বাসস্টপে একজন স্প্যানিশ পর্যটক ভালুকের আক্রমণের শিকার হন।
জাপানে মূলত দুই ধরনের ভালুক দেখা যায়—এশিয়ান কালো ভালুক এবং হোক্কাইডো দ্বীপে থাকা বড় আকারের বাদামি ভালুক।
সূত্র: বিবিসি