‘ফ্লেশ’ উপন্যাস লিখে বুকার জিতেছেন লেখক ডেভিড সালাই
হাঙ্গেরিয়ান-ব্রিটিশ লেখক ডেভিড সালাই পেয়েছেন ২০২৫ সালের বুকার পুরস্কার। তাঁর লেখা উপন্যাস ‘ফ্লেশ’–এর জন্য এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। ১০ নভেম্বর পুরস্কারটি ঘোষণা করে বুকার প্রাইজ কমিটি। সালাই হলেন বুকার পুরস্কার জেতা প্রথম হাঙ্গেরিয়ান-ব্রিটিশ লেখক, যিনি ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য লিখে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সাহিত্য পুরস্কারগুলোর একটি অর্জন করলেন।
বিজয়ী : ফ্লেশ
শর্টলিস্ট
ফ্লেশ, দ্য ল্যান্ড ইন উইন্টার, দ্য রেস্ট অব আওয়ার লাইভস, অডিশন, দ্য লোনলিনেস অব সোনিয়া অ্যান্ড সানি
২০২৫ সালের বুকার বিচারক প্যানেল ‘ফ্লেশ’কে বিজয়ী বই হিসেবে নির্বাচন করেছে। এই প্যানেলের নেতৃত্বে ছিলেন ১৯৯৩ সালের বুকারজয়ী রডি ডয়েল, যিনি প্রথমবারের মতো কোনো বুকারজয়ী লেখক হিসেবে বিচারকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেন। তাঁর সঙ্গে বিচারক ছিলেন বুকার প্রাইজ লংলিস্টেড ঔপন্যাসিক আয়োবামি আদেবায়ো, পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী, প্রযোজক ও প্রকাশক সারা জেসিকা পার্কার, লেখক, সম্প্রচারক ও সাহিত্যসমালোচক ক্রিস পাওয়ার এবং নিউইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার ও বুকার প্রাইজ লংলিস্টেড লেখক কাইলি রিড। তাঁরা মোট ১৫৩টি বই পড়েছেন। তাঁরা খুঁজে দেখেছেন ইংরেজি ভাষায় লেখা যেকোনো দেশের লেখকের দীর্ঘ কথাসাহিত্য। ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত হয়েছে—এমন বই বুকারের জন্য বিবেচিত হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত এবং সংযত ভাষায় লেখা উপন্যাস ‘ফ্লেশ’। বইয়ের ঘটনার ব্যাপ্তি বেশ কয়েক দশকজুড়ে বিস্তৃত। ‘ফ্লেশ’–এর গল্প এগিয়েছে হাঙ্গেরির একটি আবাসিক এলাকা থেকে লন্ডনের ধনীদের প্রাসাদ পর্যন্ত। একজন অনুভূতিহীন, দূরত্ব বজায় রাখা মানুষের জীবনকে কেন্দ্র করে গল্প এগিয়েছে। বইয়ের মূল চরিত্র নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা নানা ঘটনার কারণে ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে। এটি ডেভিড সালাইয়ের ষষ্ঠ উপন্যাস। তিনি এর আগেও ২০১৬ সালে বুকারের জন্য শর্টলিস্টে জায়গা পেয়েছিলেন।
বুকারজয়ী এই লেখক পেয়েছেন ৫০ হাজার পাউন্ড পুরস্কার এবং একটি ট্রফি। গতকাল সোমবার লন্ডনের সাউথব্যাংক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে বুকারজয়ী সালাইয়ের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গত বছরের বিজয়ী সামান্থা হার্ভি। বুকারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা অন্য লেখক ও অনুবাদকেরাও পুরস্কার পান। পাশাপাশি বুকারজয়ী বইয়ের বিক্রি ও জনপ্রিয়তাও অনেক বেড়ে যায়।
উপন্যাসের লেখক সালাই বিবিসি রেডিওকে বলেছেন, তাঁর বাবার দেশ হাঙ্গেরিকে তিনি কখনো পুরোপুরি নিজের মনে করেননি। আবার লন্ডন থেকে বহু বছর দূরে থাকার কারণে লন্ডনও তাঁর কাছে দূরের শহর হয়ে উঠেছিল। তাই তিনি এমন এক উপন্যাস লিখতে চেয়েছিলেন, যা হাঙ্গেরি ও লন্ডন, দুই জগতের কোনোটির না হয়ে মাঝখানে দাঁড়ানো এক মানুষের গল্প বলবে।
বুকার বিচারকদের চেয়ারম্যান রডি ডয়েল বলেছেন, ‘এ রকম লেখা আমরা আগে কখনো পড়িনি। বিভিন্ন দিক থেকে বইটি অন্ধকার জগতের হলেও পড়তে দারুণ লাগে। পৃষ্ঠার সাদা জায়গাগুলোও লেখক যেন গল্পের অংশ বানিয়ে নিয়েছেন। পাঠককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নিজের মতো করে চরিত্রটি গড়ে নিতে।’
সূত্র: বুকার প্রাইজ ওয়েবসাইট ও রয়টার্স