দীর্ঘজীবী স্থলজ প্রাণীদের মধ্যে কচ্ছপ অন্যতম। সাধারণত এক শ থেকে দেড় শ বছর বাঁচে কচ্ছপরা। কিন্তু ক্যারিবীয় অঞ্চলের সেন্ট হেলেনা দ্বীপের একটি কচ্ছপ বেঁচে আছে ১৯১ বছর ধরে। বিশালাকার এই কচ্ছপটির নাম জোনাথন। জোনাথনের জন্ম ১৮৩০ সালে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রাণী হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে এই কচ্ছপটি। দীর্ঘজীবী এই কচ্ছপটি থাকে সেন্ট হেলেনা দ্বীপের গভর্নরের বাড়িতে। প্রাচীনতম স্থলজ প্রাণী হওয়ার জন্য এরই মধ্যে সে পেয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর স্বীকৃতি।
জোনাথন একটি গ্যালাপাগোস জায়ান্ট টর্টয়েস প্রজাতির কচ্ছপ। দৈর্ঘ্যে ১.২ মিটার (৩.৯ ফুট) পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে এই প্রজাতির কচ্ছপ। জোনাথনের ওজন প্রায় ১৮২ কেজি আর তার খোলস ৬.৮ সেন্টিমিটার পুরু, যা স্পেকল্ড কেপ কচ্ছপের মতো। পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম প্রজাতির কচ্ছপ এটি। প্রজাতিটি সাধারণত দাগযুক্ত কাছিম নামে পরিচিত। কচ্ছপগুলো সাধারণত ধীরগতিতে চলে। এদের গতি প্রায় ০ দশমিক ২৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। জোনাথনের দ্রুততম গতি ৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা।
জোনাথন কিন্তু বেশ বিখ্যাত। তার ছবি আছে সিচিলিসের পাঁচ পেন্সের নোটে। সিচিলিস জোনাথনের জন্মস্থান। পঞ্চাশ বছর আগে সিচিলিস থেকে জোনাথনকে আরও তিনটি কচ্ছপের সঙ্গে সেন্ট হেলেনায় নিয়ে আসা হয়। দূরদূরান্ত থেকে সেন্ট হেলেনা দ্বীপের গভর্নরের বাড়িতে মানুষ আনে জোনাথনকে দেখতে। এই বাড়িতে জোনাথন ছাড়াও আছে আরও তিনটি কচ্ছপ। পশুচিকিৎসক জো হলিনস যত্ন নেন কচ্ছপগুলোর। বছরের পর বছর ধরে জোনাথনের ঘ্রাণশক্তি এবং দৃষ্টিশক্তি কমে এসেছে। কিন্তু জোনাথন এখনো সক্রিয়। শ্রবণশক্তি ব্যবহার করে ঘুরে বেড়ায় সে। জোনাথন পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবন্ত প্রাণীর চেয়ে বেশি সময় ধরে আছে–এটা ভেবে বিস্মিত হয় মানুষ।
জোনাথনের ১৯১তম জন্মদিন ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ধুমধাম করে পালিত হয়েছিল সেন্ট হেলেনা দ্বীপে।