এ মৌসুমে ত্বকের যত্নে যা করা প্রয়োজন
কৈশোরে সৌন্দর্যের ব্যাপারে কেউ কেউ একটু বেশিই সচেতন হয়ে ওঠে। কেউ আবার এসব নিয়ে খুব একটা ভাবে না। তবে সুস্থতার প্রয়োজন সবারই। সৌন্দর্যের খোঁজে ত্বকে যেকোনো প্রসাধন প্রয়োগ করাটা ভুল, তাতে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। আবার ত্বকের সাধারণ যত্নের দিকগুলো এড়িয়ে যাওয়ারও সুযোগ নেই।
কৈশোরে ত্বক বেশ কোমল থাকে। কিশোর-কিশোরীদের ত্বকের যত্নে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কিছু সাদাসিধে নিয়ম মেনে চলা আর ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখাটাই মূল বিষয়। আমাদের দেশে বছরের বেশির ভাগ সময়ই আবহাওয়া গরম থাকে। বেশ কয়েক মাস বৃষ্টিও হয়। তবে গরম ভাবটা রয়েই যায়। এমন আবহাওয়ায় ত্বকের যত্নের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম।
মুখ ধোয়া ভালো, তবে কতবার?
ত্বকের সুস্থতার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিকল্প নেই। তবে তার মানে এই নয় যে কিছুক্ষণ পরপরই মুখ ধুতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র দুবার মুখে ফেসওয়াশ বা মৃদু ক্ষারের সাবান প্রয়োগ করাই যথেষ্ট, এর বেশি নয়; তাতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। খুব বেশি ঘষে পরিষ্কার করাও ঠিক নয়। মুখ ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। মূলত ফেসওয়াশ বা সাবানের প্রয়োজন হয় বাইরে থেকে ফেরার পরই। এর বাইরে গোসল ও ওজুর সময় পানিতেই মুখ পরিষ্কার হয়ে যায়। প্রয়োজনে সারা দিনে কয়েকবার মুখে পানির ঝাপটা দেওয়া যায়। প্রয়োজন অনুযায়ী রোজই গোসলের সময় গায়ে সাবান বা তরল পরিষ্কারক ব্যবহার করা যেতে পারে।
পুষ্টির বিকল্প নেই
পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে রোজ। গরম আবহাওয়ায় সামান্য লবণ মিশিয়ে লেবু-পানি খাওয়া যেতে পারে। অন্যান্য ফলের রসও উপকারী। তবে গোটা ফল বা ফলের টুকরা খেলে বেশ খানিকটা আঁশ পাওয়া যায়, যা শুধু রস থেকে পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্যের জন্য আঁশ দারুণ উপকারী। শাকসবজিও খাওয়া চাই। পানি ও লবণের চাহিদা মেটাতে মাঝেমধ্যে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকও খাওয়া যেতে পারে এই বয়সে।
রোদবৃত্তান্ত
বাইরে যাওয়ার আগে নিয়মমাফিক সানস্ক্রিন সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর (এসপিএফ) ৫০ বা তার বেশি, এমন সানস্ক্রিন সামগ্রী প্রয়োজন আমাদের দেশের কড়া রোদে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, সানস্ক্রিন সামগ্রী প্রয়োগের পর ত্বক যাতে তেলতেলে হয়ে না থাকে, তাহলে ত্বকের স্বাভাবিক ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। দুই-তিন ঘণ্টার মধ্যে সানস্ক্রিন সামগ্রীর কার্যকারিতা শেষ হয়ে যায়। তাই প্রয়োজন হলে আবার লাগিয়ে নিতে হবে। তবে এ কথাও মনে রাখতে হবে যে রোদ আমাদের বন্ধু। রোদে না গেলে আমাদের দেহে ভিটামিন ডি তৈরি হয় না। তাই সারা দিনে অন্তত মিনিট কুড়ি সময়ের জন্য ত্বকের বেশ খানিকটা অংশে রোদ লাগানো প্রয়োজন। এই সময়ে সানস্ক্রিন সামগ্রী ব্যবহার করা যাবে না। কিংবা মুখে সানস্ক্রিন সামগ্রী লাগিয়ে নিলেও হাতে-পায়ে-গায়ে রোদ লাগাতে হবে, যতটা পারা যায়।
ব্রণের চিন্তায়…
কারও কারও ব্রণ হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় এই বয়সে। এ প্রবণতার জন্য জিনগত কারণ যেমন দায়ী, তেমনি দায় আছে হরমোন ও জীবাণুরও। ঠিকঠাক চিকিৎসা নিলে ব্রণ সেরে যায়। ব্রণের দাগও থাকে না। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
পানি যখন শত্রু
ভেজা ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়। তাই ত্বক শুকনা রাখতে হবে। বৃষ্টিতে ভিজলেও তার পরপরই ত্বক ভালোভাবে মুছে ফেলা উচিত। ঘাম হলেও মুছে ফেলতে হবে। দেহের বিভিন্ন ভাঁজে ঘাম বেশি হয়। ত্বকের এসব অংশ মোছার ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে।