লগড ইন লাইফ

একটি অলস দুপুর। ক্লাস শেষ করে নিজের ঘরে ফিরে এলাম। জানালার ফাঁক দিয়ে রোদের আলো পড়ছে আমার ডেস্কের ওপর। আমার ল্যাপটপটা খুলে বসলাম। মাথায় শুধু একটি চিন্তা—হাই গ্রাফিকসের ফ্রি গেম পাওয়া যায় না স্টিমে? স্টিম খুলতেই চোখ আটকে গেল একটি গেমে, নাম—‘Door.exe’।

কোনো কোম্পানির নাম বা রিভিউ নেই। এমনকি গেমের সাইজও মাত্র ৩.২ জিবি।

‘ফ্রি তো, দিই দেখি, ট্রাই করি,’ বলেই ইনস্টল বাটনে চাপ দিলাম।

প্রবেশ:

গেম চালু হতেই স্ক্রিনে শুধু একটি জিনিস—একটি ধাতব দরজা। নিচে লেখা—

‘Enter your reality to change it.’

আমি মজা করেই ‘NazhaZarif_Real’ লিখে Enter চাপলাম।

হঠাৎ স্ক্রিন ঝাপসা হয়ে গেল। কাঁপতে শুরু করল ল্যাপটপ। হাত সরাতে গেলাম, পারলাম না।

আরও পড়ুন

আলো নিভে গেল। চোখ খুলতেই দেখলাম, আমি একটি অদ্ভুত ভার্চু৵য়াল শহরে। ঠিক যেন আমার কল্পনার মতো।

এটি কোনো সাধারণ গেম নয়, এটি একটি ডায়নামিক রিয়েলিটি সিমুলেশন। যেখানে আমি যেটি ভাবি, সেটি গড়ে ওঠে।

প্রথমে মজা লাগছিল। একটি গেম ক্যাফে বানালাম, যেখানে সবাই ফ্রি গেম খেলতে আসে। নিজের মতো করে জীবন গড়ছিলাম; কিন্তু ধীরে ধীরে দেখলাম, আমার ভয়, টেনশন, লজ্জা—এসবও রূপ নিচ্ছে। রাস্তায় আমার স্কুলের লোকেরা, কেউ ব্যঙ্গ করছে, কেউ প্রশ্ন করছে—

‘তুমি এখনো এভাবেই বাঁচতে চাও?’

রহস্য শুরু হয় তখন। আমি বুঝলাম, এই গেম শুধু আমার ইচ্ছা নয়, আমার মনের গোপন দিকগুলোও প্রকাশ করছে। একটি ছায়া আমাকে অনুসরণ করতে লাগল। তার মুখ নেই, চোখ থেকে শুধু লাল আলো বের হয়।

আরও পড়ুন

সে আমার ভয়গুলোকে শক্তি বানিয়ে আমাকে ধ্বংস করতে চায়। তাকে থামাতে হলে দরজার উৎস খুঁজে বের করতে হবে।

শেষ:

অনেক বাধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি সেই ধাতব দরজার কাছে পৌঁছালাম। দরজার ওপাশে লেখা ছিল, ‘তোমার ভয়, তোমার সম্ভাবনা—যেটা বেছে নেবে, সেটিই সত্য হবে।’ আমি চোখ বন্ধ করে বললাম—

‘ভয় নয়, আমি ভবিষ্যৎ বেছে নিই।’ চোখ খুলতেই নিজেকে আবার ল্যাপটপের সামনে পেলাম। ডেস্ক, জানালা, আলো—সব আগের মতো; কিন্তু একটিই পার্থক্য—

ডেস্কটপে নতুন একটি ফোল্ডার, নাম—‘Reality BackUp’।

আমি আর ক্লিক করলাম না। কারণ আমি জানি, সবচেয়ে বড় গেম, নিজের জীবনটাই।

আর এবার আমি সেটি নিজের মতো করে খেলব।

লেখক: শিক্ষার্থী, দশম শ্রেণি, খুলনা জিলা স্কুল, খুলনা

আরও পড়ুন