আমি কারও সঙ্গে মিশতে পারি না

প্রিয় মনোবন্ধু,

আমার অনেকগুলো সমস্যা। আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। স্কুলে আমার হাতে গোনা দু-তিনজন বন্ধু আছে। আমি কারও সঙ্গে মিশতে পারি না। কোনো কাজে মন বসে না। আমি শুধু আম্মু-আব্বুর কাছে বকা খাই। কোনো কারণ ছাড়াই কান্না আসে। কারও সামনে কান্না করতেও পারি না। আর নিজেকে খুব একা লাগে। কোনো কিছু ভালো লাগে না। এর সমাধান কী?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর: তুমি মোটেও একা নও। একটু খেয়াল করলে দেখবে, নাই নাই করেও তোমার বেশ কিছু বন্ধু কিন্তু আছে। তোমার পরিবারের সদস্যরা আছেন। শিক্ষকেরা আছেন। আর কিশোর আলোমনোবন্ধু তো আছেই! কান্না করার ইচ্ছা হলে কান্না চেপে রাখার দরকার নেই। তুমি কাঁদবে এবং কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলবে, ‘মন খারাপ করলে কান্না করাই স্বাভাবিক।’ কারও সঙ্গে মিশতে পারো না, এই সমস্যার সমাধান কিন্তু খুব কঠিন নয়। একটু সাহস করে মেশা শুরু করো। প্রথম প্রথম জড়তা-ভয় কাজ করবে, সে জন্য আয়নার সামনে কোনো বন্ধুকে কল্পনা করে তার সঙ্গে কথা বলা প্র্যাকটিস করো। এরপর সরাসরি একদিন তার সঙ্গে আলাপ করো। কেউ যদি তোমাকে নিয়ে হাসাহাসিও করে, তাতে হাল ছেড়ে দেবে না। নিজের পছন্দ–অপছন্দ দৃঢ়ভাবে অন্যদের জানান দেবে। কোনো কাজে মন দিতে হলে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ওই কাজের জন্য পরিকল্পনা করো। একটু একটু করে ধাপে ধাপে কাজটি করার চেষ্টা করো। মন উঠে গেলে একটু বিশ্রাম নিয়ে, টিভি দেখে বা গান শুনে কিংবা কিআ পড়ে নিয়ে আবার সেই কাজে মন দাও। মা–বাবা যদি তোমাকে বকা দেয়, তবে মোটেই মন খারাপ কোরো না। তাঁদের কথাগুলো মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করো। তাঁরা যদি বিনা কারণে তোমাকে বকা দেন, তবে সেটাকে নিজের মনের মধ্যে গ্রহণ কোরো না; বরং তাঁদের আমার এই উত্তর দেখিয়ে বলো, শিশু–কিশোরদের বকা দিলে তাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই বকা নয়, তাদের বুঝিয়ে বলাটা জরুরি। রাতে সময়মতো ঘুমাও। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে প্রকৃতির দিকে তাকাও, ভালো ভালো বই-কবিতা পড়ো, গান শোনো; দেখবে পৃথিবীটা কত সুন্দর। আর হ্যাঁ, প্রতিদিন একবার করে নিজেকে ধন্যবাদ দিতে ভুলো না।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।