ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু হলে দুধ খাওয়া কি একদমই নিষিদ্ধ
পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় দুধ প্রায় সবার ওপরে। তবে সবাই দুধ খেয়ে ঠিকঠাক হজম করতে পারে না। অনেকেরই দুধ খাওয়ার পরে পেট ফাঁপা, গ্যাস বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা কারও দেখা দিলে তাকে বলা হয় ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু (Lactose Intolerant)। কারও যদি এমন সমস্যা থাকে, তবে অনেকেই পরামর্শ দেয়, তুমি দুধ খেও না। এই পরামর্শ কতটা সঠিক, তা নিয়ে আজকের লেখা।
মনে হতে পারে, ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু ব্যক্তিদের জন্য দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার নিষিদ্ধ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধারণাটি পুরোপুরি সঠিক নয়। কিছু কৌশল অবলম্বন করে যে কেউ খাবারগুলো খেতে পারে।
ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা কী?
দুধে থাকা একটি প্রাকৃতিক চিনি হলো ল্যাকটোজ। যাদের ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতার সমস্যা থাকে, তাদের শরীরে ল্যাকটেজ নামের এনজাইমটি পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না। এই এনজাইমটি ল্যাকটোজকে ভাঙতে না পারার ফলে দুধ, তাজা পনির বা আইসক্রিমের মতো খাবার খাওয়ার পর পেট ফাঁপা, গ্যাস বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
দুধ কি খাওয়া যাবে
বিশেষজ্ঞদের মতে ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু হলেও কয়েকটি সহজ উপায়ে দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া সম্ভব। যেমন নিরাপদ খাবার বেছে নিতে হবে। কিছু দুগ্ধজাত খাবারে ল্যাকটোজের পরিমাণ খুব কম থাকে। ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুদের জন্য এগুলো নিরাপদ। তাই পরিমিত পরিমাণে এই খাবারগুলো খেলে কোনো সমস্যা তৈরি হবে না বলে আশা করা যায়। যেমন শক্ত পনিরের মধ্যে ল্যাকটোজের পরিমাণ বেশ কম থাকে। আবার মাখনের প্রায় পুরোটাই ফ্যাট। এতে ল্যাকটোজ থাকে না বললেই চলে। দইয়ের মতো খাবার তৈরির সময়ই ব্যাকটেরিয়া ল্যাকটোজের একটি অংশ ভেঙে ফেলে। ফলে এগুলো সহজে হজম হয়। তাই দুধ সরাসরি না খেয়ে দুগ্ধজাত খাবারগুলো খাওয়া যেতে পারে।
দুধ না খেলে কী হবে
অনেকে মনে করে, দুধ না খেলে পুষ্টি পাওয়া যাবে না। পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য দুধ অপরিহার্য নয়। কেউ যদি দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলে, তবে তার চিন্তা করার কিছু নেই। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং প্রোটিনের মতো প্রয়োজনীয় উপাদান সবুজ শাকসবজি, কাঁটাযুক্ত মাছ বা অন্যান্য অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাবার ও পানীয় থেকে সহজেই পাওয়া যাবে।
মনে রাখবে, ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু হলে দুগ্ধজাত খাবার পুরোপুরি বাদ দিতে হবে না। কেউ যদি বাদ দিতে চায়, তার জন্য বিকল্প তো আছেই। সঠিক বিকল্প খুঁজে নেওয়াটাই আসল কথা।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস