তুমি কতটা স্বাস্থ্যসচেতন ২

কথায় আছে, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। শরীর ভালো থাকলে মনও থাকে চাঙা। তবে স্বাস্থ্যের ভালো বা মন্দ থাকা নির্ভর করে অনেকটাই নিজের ওপর। তুমি যদি নিয়মকানুনের বালাই না করো, তবে সেটা বেঁকে বসে তোমাকেই যন্ত্রণা দেবে। তাই স্বাস্থ্যসচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। আচ্ছা, তুমি কতটা স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যত্নবান? যদি না জেনে থাকো, তবে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে জেনে নাও, তুমি কতটা স্বাস্থ্যসচেতন।

১. জন্মদিনের দাওয়াতে গেছ। ভীষণ আয়োজন। পাস্তা, বার্গার, কেক, মিষ্টি—খাবারের কমতি নেই। এ রকম খাবারদাবার সামনে পেলে তুমি যা করো—

ক. দাওয়াতের কথা শুনলে আমি আগে থেকে খেয়ে বের হই, যেন বাইরের অতিরিক্ত খাবার না খেতে হয়। আর যদি খেতেই হয়, তবে খুব মেপে খাই।
খ. আমি খুব ভোজনরসিক মানুষ। খাবার সামনে রেখে বসে থাকব নাকি? সবকিছুই খাব। নাহলে জমবে না।
গ. না, মানে ইয়ে, আমি খুব একটা খাই, এমন নয়। কিন্তু দাওয়াতে গেলে তো একটু বেশি খাওয়া হয়েই যায়।

২. রোজ যে সময় ঘুমাতে যাও এবং ঘুম থেকে ওঠো—

ক. ঘুমাতে ঘুমাতে দুইটা–তিনটা বাজে। সকালে ক্লাস বা কাজ থাকলে আবার সকালে উঠি। আর ছুটি পেলে দিই এক ঘুম!
খ. ঘড়ি ধরে ১২টায় ঘুমাতে যাই। আবার উঠি সকাল সকাল। কবির ভাষায়, ‘আমি হলাম সকালবেলার পাখি’। এমনকি ছুটির দিনেও এই রুটিনই মানি।
গ. আমার ঘুমের কোনো ঠিকঠিকানা নেই। কোনো দিন সকালে ঘুমিয়ে পড়ি, আবার কোনো দিন সারা রাত জাগি। কম ঘুমানোর বিশ্বরেকর্ড কোনো একদিন করে ফেলতে পারি!

৩. সারাক্ষণ নিশ্চয়ই পড়ালেখা বা কাজ করা যায় না। তাই তো বিরতি নিয়ে আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করি। আচ্ছা, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি বা নেটফ্লিক্সে কতটা সময় ব্যয় করো তুমি?

ক. আমি তো বলতে গেলে সারাক্ষণই এসব নিয়ে পড়ে থাকি। বরং এর ফাঁকে ফাঁকেই কাজ বা পড়াশোনা করি।
খ. কাজের পরে পুরোটা সময় এসব নিয়েই থাকি।
গ. আমি এক ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়া, এক ঘণ্টা টিভি বা নেটফ্লিক্স দেখি। তবে টানা স্ক্রিনে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকি না। মাঝেমধ্যে চোখ বন্ধ করে বিরতি নিই।

৪. কোনো কিছু খাওয়ার আগে তুমি যে কাজটি অবশ্যই করো—

ক. প্রথমেই হাত ধুয়ে নিই। ধোয়ার সুযোগ না থাকলে স্যানিটাইজ করে নিই। এরপর খাই।
খ. নির্ভর করে কী খাব। এই যেমন শুকনা খাবার হলে হাত মুছেই খেয়ে ফেলি। কিন্তু ভাতটাত হলে আবার হাত ধুয়েই খাই।
গ. ক্ষুধা লাগলে আর কোনো কিছুর ঠিক থাকে না। সোজা বসে পড়ি খেতে।

৫. কী ধরনের খাবার খেতে তুমি পছন্দ করো?

ক. সব ধরনের। তবে বাসার খাবারের চেয়ে আমার বাইরের খাবার বেশি প্রিয়। ফাস্ট ফুড কিংবা মিষ্টি। ভেবেই জিবে জল চলে আসছে।
খ. আমার শাকসবজি খেতে বেশ ভালো লাগে। তা ছাড়া বাসার খাবার, ভর্তা, মাছ—এসব পেলেই খুশি আমি। বাইরের খাবার কিংবা ভাজাপোড়া, তেল-চর্বিযুক্ত খাবার আমার দুই চোখের বিষ।
গ. খুব একটা বাছবিচার নেই। বাসার খাবার তো সব সময়ই খাই। তাই মাঝেমধ্যে বাইরের খাবারও মন্দ লাগে না।

৬. ধরো, দোকানে গেছ কিছু একটা কিনতে। কেনার সময় সবার আগে যে বিষয়টা লক্ষ করবে—

ক. প্রথমেই দেখব মেয়াদ আছে কি না। তারপর ভাবব এটা ব্যবহার করলে বা খেলে আমার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে কি না। খাবারের কিছু হলে ক্যালোরির হিসাব–নিকাশ মেলাব…
খ. মেয়াদ ঠিক থাকলে কিনে ফেলব।
গ. কেনার আগে এত লক্ষ করার কী আছে। যাব, কিনব, বাসায় চলে আসব। ব্যস!

৭. পড়াশোনা বা কাজ করতে থাকলে আমাদের অনেকেরই সময়ের খেয়াল থাকে না। এসব ক্ষেত্রে তুমি কতটা বিরতি নাও?

ক. অনেকক্ষণ বসে থাকার ব্যাপার হলে আমি মাঝখানে উঠে হাঁটাহাঁটি করি। চোখের বিরতি দিই স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকতে হলে। এগুলোর কখনো ভুল হয় না।
খ. বিরতি কেন নেব? আমি কাজ শেষে একেবারে উঠে পড়ি।
গ. কাজের মধ্যে যে বিরতি নেব, এটাই আমার মাথায় থাকে না। মনে পড়লে তখন একটু বিরতি নিই। অথবা বসে থেকে যদি ঘাড়-পিঠ ব্যথা করে, তবে উঠে পড়ি।

৮. কখনো ব্যায়াম, শরীরচর্চা, মেডিটেশন—এগুলোতে সময় দাও?

ক.বিছানা থেকে পড়ার টেবিলের দূরত্বকে যদি হাঁটাহাঁটি করা বলা যায়, তবে সেটা আমি করি। তবে এই দূরত্বকে আক্ষরিক অর্থেই আমার বেশ দূরের একটা পথ মনে হয়।
খ. মাঝেমধ্যে হাঁটতে যাই। তবে নিয়মিত ব্যায়াম করার সময় হয়ে না আমার।
গ. আমি রোজ ভোরে উঠে হাঁটি বা দৌড়াই। তা ছাড়া সাইকেল চালাই বা সাঁতার কাটি। অনেক সময় মেডিটেশনও করি।

৯. ধরো, তুমি লক্ষ করলে, তোমার বন্ধু অতিরিক্ত বাইরের খাবারের প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে তুমি কী করবে?

ক. অবশ্যই আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করব, যেন আসক্তি কাটিয়ে উঠতে পারে। এক রকম পেছনে লেগে থাকব, যেন সে পুষ্টিকর খাবারের প্রতি আগ্রহী হয়।
খ. আমি হয়তো বারণ করব, কিন্তু নিষেধ শোনা বা না শোনা তো ওর ব্যাপার।
গ. কাকে কী বলছেন? আমি নিজেই তো বাইরের খাবার খেতে থাকি। নিষেধ করব কী? নিজেই ওর সঙ্গে খাব। খেতে খেতে আলোচনা করব, কেন বাইরের খাবার এত খাওয়া ঠিক নয়।

১০. শেষ কবে তুমি অসুস্থ হয়েছিলে?

ক. আমার তো একটা না একটা অসুখ লেগেই থাকে।
খ. এই তো বেশ অনেক দিন আগে…
গ. সে অনেককাল আগের কথা। এক দেশে ছিল এক রাজা…

নম্বর

১. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
২. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৩. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৪. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০  
৫. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫ 
৬. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০ 
৭. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৮. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৯. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
১০. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০

তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে

০–৪০: স্বাস্থ্য বিষয়ে তোমার অবহেলা দেখে বলতেই হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে তোমার শরীর যেকোনো দিন তোমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে। তুমি নিজের প্রতি মোটেও যত্নবান নও। মাঝেমধ্যে হয়তো ভাবছ, কাল থেকেই নিয়ম মেনে চলবে, কিন্তু সেটা শুধু ভাবা পর্যন্তই। ঠিক সময় ঘুমানো ও খাওয়ার অভ্যাসগুলো তৈরি করতে এখনই নেমে পড়ো। নিজের জন্য এতটুকু তো করতেই পারো?

৪৫–৭০: তুমি কিছুটা স্বাস্থ্যসচেতন। তবে মাঝেমধ্যেই খেই হারিয়ে ফেল। কিন্তু যখনই দেখতে পাও, তোমার শরীরের ক্ষতি হচ্ছে, তখনই আবার নিয়মের মধ্যে চলে আসো। তুমি আরেকটু সচেতন হতেই পারো কিন্তু। যেন সব সময় তোমার নিয়ন্ত্রণ তোমার হাতেই থাকে।

৭৫-১০০: তুমিই প্রকৃত স্বাস্থ্যসচেতন। তুমি জানো, কোনটা খাওয়া তোমার উচিত, কত সময় তুমি ঘুমাবে। কতটুকু সময় তুমি ব্যায়াম করে কাটাবে। তোমার সবকিছুই নিজের নিয়ন্ত্রণে। ফলে তুমি খুব একটা অসুস্থও হও না। তুমি শুধু নিজেরই খেয়াল রাখো না, আশপাশের সবাইকেই স্বাস্থ্যসচেতন হতে পরামর্শ দাও। তোমাকে ধন্যবাদ, নিজের প্রতি এত যত্নবান হওয়ার জন্য।

আরও পড়ুন