ছোট ভাইয়ের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য কী করতে পারি?

সমস্যাটা আমার ছোট ভাইকে নিয়ে। ওর বয়স আট বছর। সে সারা দিন ঘরে বসে মোবাইলে গেমস খেলে। লেখাপড়ায় তার কোনো মন নেই। আব্বু-আম্মু তাকে পড়ালেখার জন্য স্কুলে পাঠালেও সে স্কুলে পড়তে চায় না। এর মূল কারণ হলো সারা দিন ঘরে বসে মোবাইলে গেমস খেলা। আমার ছোট ভাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, তা-ই না? তাই আমি আমার ছোট ভাইয়ের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য কী করতে পারি? যত দ্রুত সম্ভব আমার ছোট ভাইয়ের জন্য আমাকে একটি পরামর্শ দিন।

হেদায়াতুল্লাহ, ঢাকা

উত্তর: ছোট ভাইকে নিয়ে তোমার সচেতনতাকে প্রশংসা জানাই। নতুন নতুন প্রযুক্তির জালে আবর্তিত এ প্রজন্ম। দেখে মনে হয়, ওরা খেলার মাঠের আগ্রহ হারিয়েছে। শৈশবের এই সময়গুলো সুস্থ মনের বিকাশের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তুমি লিখেছ, তোমার ভাই সারা দিন গেম খেলে। সারা দিন বলতে কত ঘণ্টা বুঝিয়েছ? মাত্রাতিরিক্ত সময় ধরে গেম খেলার ফলে অনেক শিশু লেখাপড়ায়, ছবি আঁকায়, গান শোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না। বেশির ভাগ গেম অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন। আমাদের মস্তিষ্ক প্রতিনিয়ত দ্রুতগতিসম্পন্ন কোনো কিছুর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এই গেমগুলোর মধ্যে হিংসা, যুদ্ধ, ধ্বংস অস্বাভাবিক গতির ছড়াছড়ি, যা শুধু শিশুদের মনোযোগের ক্ষমতাকেই নষ্ট করে না, শিশুদের মধ্যে ধ্বংসাত্মক, আগ্রাসী ও ঝুঁকিপ্রবণ আচরণের প্রবণতাকে বাড়িয়ে তোলে। গেম আসক্তির ফলে পড়াশোনার জগৎ থেকে দূরে সরে যায়। দূরত্ব তৈরি হয় পরিবারের সঙ্গেও। তুমি অভিভাবকদের সঙ্গে গেমের নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারো। ধীরে ধীরে ছোট্ট ভাইকে বোঝাও। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে যুক্ত করতে পারো ওকে। যেমন মাঠে খেলতে নিয়ে যেতে পারো, সাঁতার শেখাতে পারো, সাইকেল চালাতে বলতে পারো, গল্পের বই পড়তে উত্সাহিত করতে পারো। তার সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলে চুক্তি করে নিতে হবে, সারা দিনে বড়জোর এক ঘণ্টা গেম খেলতে পারবে। একসময় আরও সময় কমিয়ে দিতে হবে।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।