উত্তর: প্রথম উত্তর হচ্ছে, নাম বলা মোটেই জরুরি নয়। হয়তো করোনায় ঘরে থাকার কারণে তোমার মুঠোফোন ব্যবহার বেড়ে গেছে। তবে তুমি করোনায় নিজেকে ঘরবন্দী ভাবছ, এটা ঠিক না। আসলে কেউই ঘরে বন্দী ছিল না। ঘরেই মুক্ত ছিল, করোনামুক্ত থাকার জন্য ঘরে থাকতে হয়েছে। তাই বাইরের পৃথিবীটাই ছিল বন্দী, ঘর ছিল মুক্ত। এভাবে ভাবলে আর নেতিবাচক চিন্তা তোমার মধ্যে আসবে না। করোনায় তুমি স্কুলে যেতে পারোনি, পড়ালেখায় মনোযোগ কমে গিয়েছিল। কিন্তু পাশাপাশি সেই সময় তোমার কিন্তু অনেক বড় অর্জনও হয়েছে। তুমি প্রতিকূল পরিবেশে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে শিখেছ, অতিমারির মতো একটি অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তুমি গিয়েছ। দু-এক শ বছরে এক প্রজন্ম সে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে পারে। এই অভিজ্ঞতা হয়তো ভীতিকর, কিন্তু এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাওয়ার কারণে তোমার মাঝে ঘাতসহনশীলতা বেড়েছে, যা ভবিষ্যতে যেকোনো ট্রমায় তোমাকে শক্তি জোগাবে। আর মুঠোফোন ব্যবহার মানেই কিন্তু আসক্তি নয়। আমরা বলব এই যে তুমি বুঝতে পারছ যে মুঠোফোন ব্যবহারটা অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে। তার মানে তুমি আসলে নিজেকে সাহায্য করছ। তুমি নিজের জন্য একটা রুটিন তৈরি করো। সে রুটিনে প্রতিদিন কতটুকু সময় মুঠোফোনে থাকবে, তা নির্ধারণ করে কঠোরভাবে মেনে চলার চেষ্টা করো রুটিনটাকে। প্রয়োজনে মা-বাবার কাছে সাহায্য চাও। নির্দিষ্ট সময় মুঠোফোন ব্যবহারের পর তুমি মা-বাবাকে মুঠোফোন জমা দিয়ে বলো। তুমি চাইলেও তারা যেন তা না দেয়। আর বিকল্প আনন্দের উৎস খুঁজে বের করো। গল্প-কবিতার বই আর কিআ পড়তে পারো। ভালো সিনেমা দেখবে। গান শুনবে। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাবে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাও। আর তুমি যে ভাবছ তোমাকে হেল্প করার মতো কেউ পাশে নেই, এটা কিন্তু পুরোপুরি ভুল। তোমাকে সাহায্য করার জন্য সবাই প্রস্তুত—মা, বাবা-শিক্ষক-বন্ধু এমনকি মনোবন্ধু!

আর সবকিছু করার পরও যদি তোমার মন ভালো না হয়, তবে কাছাকাছি কোনো মনোরোগ–বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারো।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।