আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। আমার বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। আমি মোটামুটি ভালো ছাত্র। আমার রোল ১। তবুও আমার বাবা খুশি নন। গণিতশিক্ষক হওয়ায় গণিত পরীক্ষার আগে আমার ওপর রাগ করেন। হা-হুতাশ করেন। ট্যাব ধরতে দেন না। আমার এগুলো অসহ্য লাগে। তা ছাড়া আমাকে ভয় দেখান যে তাঁর সম্মান রাখব না, তাঁর ইজ্জত ডোবাব ইত্যাদি। কালকে আমার গণিত পরীক্ষা। বাবা এ জন্য আমার ওপর রেগেই আছেন। আমার আর ভালো লাগে না।
ইসতিয়াক কবির
উত্তর: আমি তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। চিঠির জন্য ধন্যবাদ। তোমার মতো অনেক শিক্ষার্থী এ রকম চাপের মধ্যে দিয়ে দিন যাপন করছে। তুমি লিখেছ, তুমি শ্রেণিতে প্রথম হওয়া সত্ত্বেও বাবাকে খুশি করতে পারছ না। তিনি গণিতের শিক্ষক বলেই বোধ হয় তোমার প্রতি এ বিষয়ে তাঁর প্রত্যাশা অনেকই বেশি। অভিভাবকদের অনুভব করতে হবে, উচ্চ প্রত্যাশার চাপে লেখাপড়া ভয় হয়ে ছেলেমেয়েদের কাঁধে চেপে বসে। এতে সন্তানদের মধ্যে হীনম্মন্যতা বেড়ে যায়, আত্মবিশ্বাস কমে যায়। অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ তার চিন্তার জগেক প্রসারিত হতে দেয় না। এতে ফলাফল বিপর্যয়ের আশঙ্কাই বেড়ে যায়। প্রশংসার বদলে তিরস্কার তাকে বিদ্রোহী করে তোলে। অভিভাবকেরা সন্তানদের প্রশংসা করুন এভাবে, ‘আমার ভালোবাসা তোমার সঙ্গে আছে, আমি তোমার প্রতি আশাবাদী, আমি জানি তুমি পারবে।’ আপনার ইতিবাচকতা, স্নেহশীল ব্যবহার আপনার সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী, স্বতঃস্ফূর্ত ও সচেতন হতে সাহায্য করবে। তুমি আরও লিখেছ, তোমাকে ট্যাব ধরতে বারণ করেন। অতিরিক্ত প্রাযুক্তিক যন্ত্রপাতির ওপর নির্ভরশীলতার কারণে অনেক কিশোর-কিশোরী আসক্ত হয়ে পড়ছে; বরং পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি খেলাধুলা, পাজেল মেলানো, গান শোনা, সিনেমা দেখা, বই পড়া শরীর-মন দুই-ই ভালো রাখে।
এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - ‘মনোবন্ধু’, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।