আমার মা-বাবা খুব ঝগড়া করে

আমি দশম শ্রেণিতে পড়ি। আমার মা-বাবা খুব ঝগড়া করে। মাঝেমধ্যে ঘর থেকে রাগ করে বের হয়ে যায়। মিল হয়, আবার ঝগড়া বাধে। আর এদের দুজনের ঝগড়ার মধ্যে আমি ফেঁসে যাই। তারা খুব খারাপ ভাষা ব্যবহার করে। আমি পিএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাই। কিন্তু মা-বাবার ঝগড়ার জন্য জেএসসিতে খুব খারাপ রেজাল্ট করি। আমি এসএসসিতে ভালো করতে চাই। কিন্তু আমি পড়ালেখায় দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছি। এখন আমি পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারছি না। আমি আবার কীভাবে পড়ালেখায় ভালো হতে পারি ও মা-বাবার মধ্যে মিল করিয়ে দিতে পারি?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর: আমি বুঝতে পারছি তোমার মনের অবস্থা। তোমার সদিচ্ছা ও উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এ রকম অবস্থার মধ্য দিয়ে লেখাপড়ায় মনোযোগ দেওয়া সত্যিই কঠিন। জগতের সব বাবা-মা তাঁদের সন্তানদের নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসেন এটা সত্য। সন্তান যে প্রতি মুহূর্তে তাঁদের অনুকরণ ও অনুসরণ করে, এটা বাবা-মায়েরা অসচেতনভাবেই ভুলে যান। তাঁদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব্ব, ঝগড়া, বিবাদ, দূরত্ব সন্তানের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা তাঁরা অনুভব করতে পারেন না। এ অনাকাঙ্ক্ষিত অপ্রিয় অভিজ্ঞতায় শিশুরা প্রচণ্ড অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার অভাব বোধ করে। এ ভীষণ অসহায়ত্ব, মনঃকষ্ট কিছুতেই তাকে ভালো রাখে না। তার লেখাপড়ার প্রতি মন উঠে যায়, পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়।

ফলাফল খারাপ হলে সন্তানের যেমন মন খারাপ হয় তেমনি বাবা-মা উল্টো বকতে শুরু করেন। কিন্তু মূল কারণ খুঁজে দেখেন না। অভিভাবকদের বুঝতে হবে তাঁরা পৃথিবীতে সাদরে যে রাজপুত্র ও রাজকন্যাদের উদ্‌যাপন করে এনেছেন, তাদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। তা না হলে এ দায় বহন করতে হবে বহুকাল। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা যদি পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছাতে না পারেন, তাহলে অভিজ্ঞ কাউন্সেলরদের সাহায্য নিতে পারো।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।