এত সন্দেহ নিয়ে থাকতে ভালো লাগে না

আমি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে বলে আমার বাবা আমাকে সব সময় সন্দেহ করেন। আমি জানি কোন বিষয়ে করেন। আমার মা চেপে যান। বলেন, আমি এ রকম নই। আসলেই আমি এ রকম নই। কারণে-অকারণে সন্দেহ করেন। এটা গত বছর থেকেই। আমি স্কুলে জায়গা রাখার জন্য আগে গেলেও সন্দেহ করেন। আমি কী করব? আমার এত সন্দেহ নিয়ে থাকতে ভালো লাগে না। কোনো উপায় বলুন।

ফারহাত সুলতানা

উত্তর: তুমি যে মন খুলে আমাকে চিঠি লিখেছ এ জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। মনে হচ্ছে ভেতরে ভেতরে ভীষণ অসহায় বোধ করছ। আমি তোমার অবস্থা অনুভব করতে পারছি। বাবার সঙ্গে সম্ভবত অভিমানের দেয়াল পুরু হতে শুরু করেছে। তুমি লিখেছ, বাবাকে বোঝাতে পারছেন না মা। অভিভাবকদের মমতাভরা সন্তানটির কোমল মনটির কথা ভাবতে হবে। বয়ঃসন্ধির এ সময়ে শিশুদের মধ্যে মূল্যবোধ তৈরি হয়, নিজেকে গঠন করতে শেখে, তারা নিজেদের আলাদাভাবে ভাবতে শুরু করে। হরমোনের পরিবর্তনে কখনো বিষণ্ন হয়, কখনো উৎফুল্ল হয়—হঠাৎ রেগে যায়, আবার ভুলেও যায়। অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে কান্নাকাটি করে। বন্ধুত্ব তাদের কাছে মূল্যবান হয়ে ওঠে। অভিভাবকদের কাছে এই পরিবর্তনগুলো মেনে নিতে কষ্ট হয়। সন্তানটিকে হঠাত্ অচেনা লাগে, একধরনের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তা কাজ করে। এ অসহায়ত্ব থেকে সন্তানকে পাহারা দিয়ে রাখতে চান তাঁরা। অকারণ সন্দেহ, তাদের প্রাইভেসি ভঙ্গ করা, তাদের মনকে বিদ্রোহী করে তুলতে পারে। মা-বাবাকে সচেতনভাবে ভালোবাসা ও দায়িত্বের কথা ভেবে নিজেদের নেতিবাচক আবেগগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। একজন আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন ও আত্মবিশ্বাসী ভালো মানুষ তৈরির জন্য আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করব। প্রিয় সন্তানটিকে বলতে হবে, ‘আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি, তোমাকে বিশ্বাস করি। তুমি বড় হবে আমি সে অপেক্ষায় আছি এবং তোমার যেকোনো প্রয়োজনে সাহায্য লাগলে আমাকে জানাবে।’

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।