কারও রোগ নিয়ে হাসাহাসি করা ঠিক নয়

প্রিয় মনোবন্ধু,

আশা করি ভালো আছ। আমি আজ এমন এক বিষয় সম্পর্কে বলব, যা অনেক ছেলের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়ি, তখন আমার স্তনে একটা রোগ দেখা দেয়। আমার স্তন হঠাৎ বড় হতে থাকে। বিষয়টি খুব লজ্জাজনক। পরে রোগটির নাম গাইনি কেমেস্টিয়া হিসেবে জানতে পেরেছি। আমি আমার মা–বাবাকে বিষয়টি বলতে লজ্জা পেতাম। এখন তিন বছর হয়ে গেছে, তবু কোনো উন্নতি হয়নি। আমি কোনো খেলাধুলা করতে পারি না। কেননা অনেক সময় জার্সি পরার প্রয়োজন পড়ে। সব সময় শার্ট পরতে হয়। অতি গরমেও শার্ট পরতে হয়। বর্তমানে আমার মা–বাবা বিষয়টি জানলেও তারা বিষয়টি নিয়ে মজা করে। এখন আমি না পারি কাউকে বলতে, না পারি চিকিৎসক দেখাতে। বিষয়টি কত কষ্টকর, যাদের হয়েছে তারাই একমাত্র বুঝতে পারবে। এ বিষয়ে কোনো জায়গায় খোলামেলা কিছু লেখা দেখা যায় না। কিশোর আলোর কাছে আমার একান্ত নিবেদন, বিষয়টি নিয়ে যেন কিআ সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং এর সঠিক কোনো পরামর্শ দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর: তুমি যে সমস্যার নাম বললে, সেটির উচ্চারণ গাইনেকোমাস্টিয়া। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি কারণে এটি হতে পারে। মনে রাখবে, এটি নিরাময়যোগ্য রোগ। এটির জন্য তুমি এন্ডোক্রাইনোলজি (হরমোন) বিশেষজ্ঞ বা প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারো। এটি নিয়ে লজ্জা বা ভয়ের কিছু নেই। তুমি কোনোভাবেই এ সমস্যার জন্য দায়ী নও। মা–বাবাকে বুঝিয়ে বলবে এবং প্রয়োজনে আমার লেখাটি দেখাবে। তুমি সম্ভবত এখন ক্লাস টেনে পড়ছ। তুমি দেরি না করে সরকারি মেডিকেল কলেজে উল্লিখিত বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করো। এটি অন্যান্য রোগের মতোই একটি রোগ। উপযুক্ত চিকিৎসায় এটি ঠিক হয়ে যায়। তুমি লজ্জা বা ভয়ের বদলে এই সমস্যা নিয়ে পরিবার ও নিকটজনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারো। তুমি নিজেই এ রোগ থেকে মুক্ত হয়ে অন্যদের সচেতন করতে পারো। তুমি নিজেই সবাইকে বোঝাও যে কারও রোগ নিয়ে কটাক্ষ করা বা হাসাহাসি করা মোটেই ঠিক নয়। তোমার কষ্টকর অনুভূতি আমরা বুঝতে পারছি। কিআর কাজই হচ্ছে ভালো ভাবনা করতে শেখানো। তুমি নিজে বিষয়টি নিয়ে মোটেই হীনম্মন্যতায় ভুগবে না। হয়তো দেখবে আরও অনেকের এই সমস্যা রয়েছে। তুমি নিজেও তাদের সচেতন করতে পারো।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।