কীভাবে চিন্তামুক্ত থাকতে পারব?

কয়েক মাস ধরে একদম চুপচাপ হয়ে গেছি আমি। আগে সবার সঙ্গে যেমন কথা বলতাম, মেলামেশা করতাম। এখন কিছুই ভালো লাগে না। সারা দিন আমি কিছু একটা নিয়ে চিন্তা করি। কিন্তু কী নিয়ে চিন্তা করি, সেটি নিজেও বুঝতে পারি না। পড়ালেখাও ভালোভাবে করতে পারি না। একেক সময় অনেক অস্থির লাগে, দম বন্ধ হয়ে আসে। আমি কয়েক দিন আগে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি। ব্লাড টেস্ট করার পর চিকিৎসক বলেন যে আমার ব্লাডে হিমোগ্লোবিন খুবই কম। ডাক্তার বলেছেন, আমি বেশি চিন্তা করি, ফলে আমার হিমোগ্লোবিন কমে যাচ্ছে। আমাকে চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। আমি অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। আমি কীভাবে চিন্তামুক্ত থাকতে পারব?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর: মনে হচ্ছে, তোমার মধ্যে একধরনের দুশ্চিন্তামিশ্রিত বিষণ্নতা (ডিপ্রেশন) তৈরি হয়েছে। অনেক সময় কোনো কারণ ছাড়াও বিষণ্নতা হতে পারে, আবার রক্তস্বল্পতাও (অ্যানিমিয়া, কম হিমোগ্লোবিন) কিন্তু বিষণ্নতার অন্যতম কারণ। তোমাকে রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা করাতে হবে, বাড়াতে হবে হিমোগ্লোবিন। রক্তক্ষয়ের কারণ থাকলে তা দূর করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে খাদ্যতালিকা তৈরি করতে হবে। আর তোমার সামাজিক দক্ষতা বাড়ানো দরকার। দরকার বন্ধু আর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো। ইতিবাচক চিন্তা বেশি বেশি করে করবে। আগে যেসব কাজে আনন্দ পেতে (গান শোনা, বই পড়া), ভালো না লাগলেও বেশি বেশি করতে হবে সেগুলো। একসময় আবার ভালো লাগবে। আর সফলতার মতো ব্যর্থতাও জীবনের একটি অনুষঙ্গ, ব্যর্থতাকে মেনে নিতে হবে। তবে এটা আঁকড়ে রাখা যাবে না। তুমি অবশ্যই বিষণ্নতামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক হতে পারবে। প্রয়োজনে তুমি মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজে মানসিক রোগ বহির্বিভাগে বা ঢাকার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বহির্বিভাগে সাক্ষাৎ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারো।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।