ফেসবুকের নেশা থেকে সরে আসতে পারছি না

আমি নবম শ্রেণিতে পড়ি। আমি পড়তে ভালোবাসি। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি আমি বিভিন্ন প্রকার গল্পের বই পড়তে পছন্দ করি। কিন্তু ইদানীং আমি কৌতূহলবশত ফেসবুকে অধিক সময় ব্যয় করছি। আমি ফেসবুকের নেশা থেকে সরে আসতে পারছি না, যার জন্য বাসায়ও আমাকে অনেক বকা খেতে হয় এবং সেই বকার জন্য পড়াশোনায়ও মন বসছে না। আমি এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চাই। পড়াশোনা করতে চাই আমি। আমায় সাহায্য করো, মনোবন্ধু।

কামরুন নাহার

উত্তর: তোমাকে তোমার আত্মোপলব্ধির জন্য অভিনন্দন! ফেসবুকে তুমি নিয়ন্ত্রণহীন সময় ব্যয় করছ। তুমি লিখেছ নেশা থেকে সরে আসতে পারছ না। পরিবারেও সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে, লেখাপড়ায় মন দিতে পারছ না। আরও বিস্তারিত জানতে পারলে সুবিধা হতো। ফেসবুকে আসক্ত হয়ে পড়লে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মনের অজান্তেই পার হয়ে যায়। ফলে কোনো কাজ করারই সময় থাকে না। হারিয়ে যায় স্কুলের মজা, খেলার মাঠের আনন্দ। মা-বাবার মুখের দিকে তাকানোর সময় থাকে না, ভাইবোনের খুনসুটির চেয়ে ভালো লাগে লাইক পেতে বা দিতে। মাঝরাতে নোটিফিকেশনের চিহ্ন দেখলেই মন আঁকুপাঁকু করে ওঠে, কেউ বাঁকা মন্তব্য পাঠালে তা নিয়েও পার হয়ে যায় অনেকটা মূল্যবান সময়। অতিরিক্ত আসক্তির ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়, আবেগ-অনুভূতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, কাজ আর পড়ার আগ্রহ হারিয়ে যায়, সময়জ্ঞান থাকে না। পিঠে ব্যথা, ওজনের ভারসাম্য নষ্ট আর ঘুমের ব্যঘাত হয়। তুমি যেহেতু এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছ, আশা করি তুমি পারবে। মনস্থির করাটা গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে প্রশ্ন করো অগ্রাধিকার কোনটি? রাতারাতি সবকিছু পাল্টে যাবে না, ধীরে ধীরে সময়টা কমিয়ে আনো। ভীষণ কষ্ট হবে। রুটিনটা পাল্টে ফেলো। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, ব্যায়াম করতে, বই পড়তে, গান শুনতে, সিনেমা দেখতে পারো। পারিবারিক সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগ দিতে পারো। এগুলো অভ্যাসে পরিণত হবে। এরপরও নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পেশাদার কাউন্সেলরের সহযোগিতা নিতে পারো।

আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিরোধী নই। সচেতন থেকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।