মা কারণ ছাড়াই বকা দিচ্ছে

আমি জানি না, আমার এই চিঠি ছাপানো হবে কি না। তবু লিখছি। আমার মা আমার ওপর কয়েক দিন ধরে খুবই রাগান্বিত। কেন জানি না, ছোট ছোট বিষয়ের ওপর বা কখনো কারণ ছাড়াই বকা দিচ্ছে। অকারণে আমাকে সন্দেহ করে। অথচ আমি সবকিছু মাকে বলে করি। আমার ফ্রেন্ড নিয়েও মায়ের সমস্যা। মাকে জিজ্ঞেস করলে মা বলে, আমার এ দুনিয়ায় আসাটাই তার সমস্যা। আমি মরে গেলে মায়ের সমস্যার সমাধান হবে। আমি সবার জীবনে একটা সমস্যা। এ কারণে আমার আর বাঁচতে ইচ্ছে করছে না। পড়ায় মন বসছে না। এর একটা সমাধান দাও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর: চিঠি লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি তোমার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। লিখেছ মা তোমার ওপর রেগে আছে। অথচ রাগের কারণটা বুঝতে পারছ না। মনে হচ্ছে মায়ের সঙ্গে তোমার বোঝাপড়ায় সমস্যা হচ্ছে। মা তোমাকে বুঝতে চেষ্টা করছেন না, তুমিও অভিমানে ভেতরে-ভেতরে কষ্ট পাচ্ছ। আরও লিখেছ, সবকিছু মাকে বলে করো। সবকিছু বলতে কী বোঝাতে চেয়েছ? আরও অনেক কথাই বোঝা যাচ্ছে তোমার চিঠিতে। মনের কথাগুলো বলার জন্য আশ্রয়-প্রশ্রয়ের জায়গা খুবই দরকার। তোমরা বাড়িতে কতজন সদস্য? আর কোনো ভাইবোন আছে কি? তুমি মায়ের সঙ্গে খোলাখুলিভাবে কথা বলো। সুস্থ-সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য নিজেকে গুটিয়ে রাখলে চলবে না; বরং প্রাণবন্ত, উৎফুল্ল, খোলামেলা স্বভাবের হতে হবে। অনেক অভিভাবকই মনে করেন সন্তান আমার, সুতরাং আমি তার মঙ্গলের জন্য সব কথাই বলতে পারি। সন্তানের কোমল মনটির কথা বিবেচনা করা খুবই জরুরি। মা-বাবাকে মনে রাখতে হবে, সন্তানের একটি নিজস্ব জগৎ আছে। সেটিকে সে রক্ষা করে চলে। মা-বাবাকে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। মা-বাবা যদি প্রতিনিয়ত সন্তানের মনের খবর রাখেন, খোলাখুলি কথা বলার পথ খোলা রাখেন, তবেই একটি শিশু স্বতন্ত্র স্বাধীন ব্যক্তিত্ব নিয়ে বেড়ে উঠবে।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।