নতুন জগতের সন্ধান পেয়েছি
সময়টা ছিল ২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর। করোনা মহামারির দীর্ঘ অচলাবস্থার পর তখনো সবকিছু যেন একটু অগোছালো। ২৩ ডিসেম্বর আমাদের বিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় জাতীয় সাহিত্য উৎসবের। সেদিনই প্রথম আমার কিশোর আলোর সঙ্গে পরিচয়। হাতে তুলে নিলাম রঙিন কভারে মোড়ানো একটি ম্যাগাজিন—‘কিশোর আলো’। এর আগে কখনো কোনো ম্যাগাজিন হাতে নেওয়া বা পড়া হয়নি। তাই প্রথম দেখাতেই এক অদ্ভুত টান অনুভব করলাম। কভারের ভেতরে কী আছে, তা জানার জন্য আর একমুহূর্তও অপেক্ষা করতে পারিনি। চোখের সামনে ভেসে উঠল অসংখ্য আকর্ষণীয় লেখা, গল্প, ফিচার। লোভ সামলাতে না পেরে অনুষ্ঠান চলাকালীনই পুরো কিআ পড়ে শেষ করে ফেললাম।
তখনো জানতাম না, আমারই এক সহপাঠী বন্ধু আগে থেকেই এই অসাধারণ ম্যাগাজিনের পাঠক। সে নিয়মিত কিশোর আলোর মাসিক সভা ‘কিআড্ডা’তেও অংশ নিত। তার মাধ্যমে জানতে পারি, করোনার কারণে সভাগুলো কিছুদিন বন্ধ ছিল। তার সহযোগিতায় খুব শিগগির ফেব্রুয়ারির কিআড্ডায় যোগ দিলাম। সেই বন্ধুর সঙ্গেই প্রথম কিআড্ডায় যাওয়া, আর সেই সভাকক্ষের প্রতিটি মুহূর্ত আজও আমার স্মৃতির পাতায় অমলিন।
একসময় চলে আসে কিশোর আলোর দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। অনলাইনে কিআ কার্নিভালের জন্য স্বেচ্ছাসেবক আহ্বান করা হলো। কিছুটা ভয়, আবার অনেকটা উত্তেজনা নিয়েই ফরম পূরণ করলাম। পরের রাতে লম্বা একটি তালিকা প্রকাশিত হলো, সেখানে নিজের নাম দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম। কিশোর আলোর সঙ্গে সেটিই ছিল আমার প্রথম স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা। এরপর একে একে কিআড্ডা, আনন্দঘণ্টা, কিআ কার্নিভালসহ প্রথম আলোর নানা আয়োজনে কিশোর আলোর স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
কিশোর আলোর সঙ্গে এই তিন বছরের পথচলায় আমি এক নতুন জগতের সন্ধান পেয়েছি, যা বিস্ময় ও প্রেরণায় ভরপুর। এই সময়টা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, দিয়েছে অসংখ্য মূল্যবান অভিজ্ঞতা। তাই কিশোর আলোর প্রতি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞতা রইল।