আমার বেড়ে ওঠার সঙ্গী কিশোর আলো

এআই দিয়ে তৈরি

দাদার ডাক শোনামাত্র সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নিচে নামতাম। ছোটবেলায় মাঝেমধ্যে বিরক্তও লাগত—এত মানুষ থাকতে শুধু আমাকে বা আমার বোনকেই কেন ডাকে? পত্রিকা ও বই পড়ার প্রতি খুব আগ্রহ ছিল আমার দাদার। শেষ বয়সে এসে পড়তে খুব কষ্ট হতো, চশমা দিয়েও ভালোভাবে পড়তে পারতেন না। এ জন্য আমাকে বা আমার বোনকে ডেকে নিতেন, আমরা তাঁকে পত্রিকার খবর ও কিশোর আলোর ফিচার, গল্প পড়ে শোনাতাম। সত্যি বলতে মাঝেমধ্যে বিরক্তবোধ করলেও সেই বিরক্তি মুহূর্তেই চলে যেত যখন কিশোর আলোটা হাতে পেতাম। এই পত্রিকার জন্যই আমি দৌড়ে যেতাম। পরে বুঝলাম—বই পড়ার লোভে হলেও দাদার সঙ্গে অতিরিক্ত কিছুটা সময় কাটাতে পেরেছি।

মাত্র কয়েক বছর আগেও কিশোর আলো আমার জন্য শুধু কয়েকটা পৃষ্ঠা ছিল। ছিল আমার অবসর সময়ের বন্ধু। নিরিবিলি দুপুর আর ছুটির দিনের বিনোদন। কিন্তু আজ এটি আমার কাছে শুধু একটি পত্রিকা বা বিনোদন নয়। এটি আমার শৈশবের আলো, আমার বেড়ে ওঠার সঙ্গী। কিআর পাতায় যেমন আছে গল্পের মুগ্ধতা, তেমনি আছে বিজ্ঞান, ইতিহাস, জ্ঞান আর বিনোদনের ভান্ডার। কখনো কমিক, কখনো কুইজ, কখনো অনুপ্রেরণামূলক লেখা—সব মিলিয়ে এটি আমার কল্পনা আর স্বপ্নকে ডানা মেলতে সাহায্য করেছে। কিশোর আলো আমার কাছে শুধু ব্যক্তিগত ভালোবাসার নাম নয়, এটি প্রজন্মকে প্রজন্মের সঙ্গে যুক্ত করার এক অদৃশ্য বন্ধন। তরুণদের প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায় কিআ, জাগিয়ে তোলে ইতিবাচকতা, বিকাশ ঘটায় বুদ্ধির। অনুপ্রেরণা দেয় ভালো কিছু করার।

কিআর সঙ্গে আমার পরিচিতি দাদার মাধ্যমে। আজ দাদা আর আমাদের মধ্যে নেই। আছে শুধু কিশোর আলোর পাতার সঙ্গে সেই বিকেলগুলোর হাসি, দাদার উষ্ণ হাতের স্নেহ আর তার সঙ্গে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত। তাই এখন কিশোর আলো আমার জন্য শুধু পত্রিকা নয়, এটি আমার দাদাকে ঘিরে রাখা স্মৃতি, যা আমাকে বারবার শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

লেখক: এইচএসসি পরীক্ষার্থী

আরও পড়ুন