আমার ঘরবাড়ি
দেশ ছাড়ার আগের বেশ কয়েকটা বছর কিশোর আলো হয়ে গিয়েছিল আমার ঘরবাড়ির মতো। দিন-রাত কাটত কিআতে। কখনো পাভেল ভাইয়ের সঙ্গে কোনো ইভেন্ট কিংবা কিশোর আলো ডটকম নিয়ে কেটে যেত ঘণ্টার পর ঘণ্টা, কখনো আবার আদনান মুকিত ভাইয়ের সঙ্গে করতাম ম্যাগাজিনের শেষ মুহূর্তে কাজ। দূরে আসার পর এত কিছু তো আর করতে পারি না। কেবল মাঝেমধ্যে কিআর সবাইকে কল দিয়ে বিরক্ত করার চেষ্টা করি।
তবে আমার মনে হয়, কিশোর আলোর মানুষজন আমার এ চেষ্টায়ও খুব একটা বিরক্ত হয় না। বাসার ছোট সদস্যের প্রতি যেমন বিরক্ত হওয়া কঠিন, ব্যাপারটা তেমন মনে হয়। ২০১৬ সালে যখন প্রথম কিআড্ডায় গেলাম, কিআ হাতে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ বকবক করেছিলাম। বকবক বলতে সমালোচনা আরকি। এটা ভালো লাগে না, ওটা ভালো লাগে না। তখনো কিশোর আলোর মানুষজন বিরক্ত হতো না। অদ্ভুত! এত ধৈর্য এদের!
এই ধৈর্যের পরীক্ষাটা অবশ্য এখনো প্রতি মাসেই দিতে হয় কিআ টিমকে। এখনো আদনান মুকিত ভাইয়ের সুবাদে যেহেতু কুইজ বানানোর সুযোগ পাই, তাই প্রতি মাসেই কুইজ পাঠাতে দেরি করি। ইচ্ছা করে যে দেরি করি, ব্যাপারটা তা নয়। তবু এত এত ব্যস্ততায় দেরি হয়ে যায়। কিন্তু কেউ কিছুই বলে না। নো বকা, নো ঝাড়ি।
এত দিন পর যখন পেছনে ফিরে তাকাই, বেশ অবাক লাগে। গোটা একটা যুগ কেটে গেল এসব করতে করতে। আমার কৈশোর রাঙানো পত্রিকা এখন নিজেই কৈশোরে পৌঁছে গেছে। দুই বছর এত দূরে থাকার পরও কিআর প্রতি ভালোবাসা একটুও কমেনি, বেশ আশ্চর্যের ব্যাপার। আশা করি, আরও অনেক অনেক যুগ বেঁচে থাকুক কিআ। তা না হলে আমার খুব বিপদ হয়ে যাবে। হঠাৎ যদি একদিন ঘরে ফিরতে মন চায়, কিআ না থাকলে ঘরে ফিরব কী করে তখন?