কিআ যেভাবে ঋদ্ধ করে

কিশোর আলো হাতে কিআড্ডায় পাঠকেরাছবি: আব্দুল ইলা

সেদিন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের একটি স্মারক বক্তৃতা চোখে পড়ল। শিরোনাম ‘নাসির আলী মামুনের এস এম সুলতান’। বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে নাসির আলী মামুনের আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে তিনি এ বক্তব্য রেখেছিলেন। 

মতিউর রহমান বলছেন, ‘মামুন বিগত পাঁচ দশকের অধিক সময় ধরে দেশ–বিদেশে আট হাজারের অধিক সেরা ব্যক্তিদের পোর্ট্রেট ছবি তুলেছেন। এদের মধ্যে চল্লিশ জনের বেশি নোবেল বিজয়ীর ছবি। তাঁদের মধ্যে আছেন লেখক অক্টাভিয়ো পাজ, গুন্টার গ্রাস, সল বেলো, ডেরেক ওবলিকট প্রমুখ। আছেন নেলসন ম্যান্ডেলা, মিখাইল গরবাচেভ, ডেসমন্ড টুটু, লেস ওয়ালেসসহ আরও অনেকে।’ 

সত্তরের দশকে বাংলাদেশে প্রথম পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির সূচনা করা নাসির আলী মামুনকে নিয়ে এই কথাগুলো পড়তে গিয়ে আমার মনে পড়ছিল দুবছর আগের কথা। কিশোর আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত হয়েছিল কিআ কার্নিভ্যাল। সেখানে আমি ছিলাম লেখক দলের সদস্য। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে চলতে থাকা কর্মশালা, আড্ডা, গান, ভেন্ট্রিলোকুইজম, পাপেট শো– সহ নানান আয়োজনে ঘটে যাওয়া মুহর্তগুলো নিয়ে লেখা ছিল আমাদের দায়িত্ব। 

আরও পড়ুন

কিআ কার্নিভ্যালে নাসির আলী মামুন নিয়েছিলেন আলোকচিত্রবিষয়ক কর্মশালা। সেটা ‘কভার’ করেছিলাম আমি। কর্মশালা শেষে কথাও হয়েছিল তাঁর সঙ্গে। এরকম গুণী একজন মানুষের সে কি বিনয়, উচ্ছ্বাস, সারল্য! মুগ্ধ হয়েছিলাম সেদিন। 

এখানে আমি আরও একটা ব্যাপার খেয়াল করি, কিশোর আলো কী দারুণভাবেই না আমাদের আলোড়িত করছে, ঋদ্ধ করছে! ম্যাগাজিনের কনটেন্টগুলো দারুণসব ‘নতুনের’ সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে, মননশীল, রুচিশীল করে তুলতে ভূমিকা রাখছে। মাসিক সভা বা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনগুলোতে যেসব কর্মশালা হচ্ছে, সেগুলোও বাড়িয়ে দিচ্ছে আগ্রহ, খুলে দিচ্ছে নতুন প্যাশনের দুয়ার। 

আরও পড়ুন

এই ব্যাপারগুলো বললাম একজন পাঠকের দৃষ্টিকোণ থেকে। আমিও তো পাঠকই ছিলাম শুরুতে। এখনও আছি। কিন্তু ব্যতিক্রমের শুরু ২০২১ সালে ঢাকা কিআ বুক ক্লাবের অনলাইন সেশনে যোগ দেয়ার পর থেকে। তারপর ধীরে ধীরে মিটিং মিনিটস থেকে শুরু করে ফিচার লেখা, কার্নিভ্যালে লেখক দলের সদস্য হওয়া—  কতকিছুই তো ঘটেছে, ঘটছে!

কিশোর আলোর অনন্যতা এখানেই। দেশের যেকোনো পাঠকের বেড়ে ওঠায় ভূমিকা রাখছে কিআ, তেমনি সেই পাঠককে ‘টিম কিআ’র সদস্য হওয়ার সুযোগও খোলা রাখছে কোনো রাখঢাক ছাড়াই। কিশোর আলো আছে বন্ধুত্বেও। মাসিক সভা বা, বুক ক্লাবের কল্যাণে হওয়া পরিচয় থেকে তৈরি হচ্ছে সমমনা বন্ধুও! আর এইসব ঘটছে সেই ২০১৩ থেকে! এক যুগ! 

শুভকামনা কিআ।

তোমার ভালো থাকা, বড় হওয়া শুধু তোমার জন্যেই জরুরি নয়; এই ইন্টারনেটে ‘এন্ডলেস স্ক্রলিং’ করার যুগে শিশু-কিশোরদের কল্যাণের জন্যেও ভীষণ দরকারি!

আরও পড়ুন