২০২৫ সালে রসায়নে সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমর এম ইয়াগিকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ‘ধাতব-জৈব কাঠামো’ আবিষ্কারের জন্য। ধাতব-জৈব কাঠামো হলো একধরনের বিশেষ আণবিক কাঠামো, যা এমনভাবে ডিজাইন করা যায় যে এর ভেতরে বিপুল গ্যাস, অণু বা অন্যান্য পদার্থ রাখা যায়। সহজভাবে বলা যায়, এটি একটি আণবিক ‘বাড়ি’ বা ‘প্যাকেট’, যার ভেতরের গহ্বরগুলো খুব বড় আণবিক মাত্রায়। এই কাঠামো বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়, যেমন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ, দূষিত পদার্থ আলাদা করা, পানি সংগ্রহ করা, ওষুধ নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেওয়া ইত্যাদি।
রবসন প্রথমে কাঠের বল ও রড দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য পরমাণুর মডেল তৈরি করতে গিয়ে এ ধারণার সূত্রপাত করেন। তিনি দেখেন যে কপার আয়ন ও চার দিকের অণু ব্যবহার করে একটি সুশৃঙ্খল স্ফটিকাকার কাঠামো তৈরি করা সম্ভব, যা হীরার স্ফটিকের মতো শক্তিশালী কিন্তু ভেতরে বিশাল গহ্বরযুক্ত। কিতাগাওয়া পরে এ ধারণাকে আরও উন্নত করেন। তিনি কোবাল্ট, নিকেল ও জিংক আয়ন ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক ধাতব-জৈব কাঠামো তৈরি করেন, যার ভেতরে থাকা সুড়ঙ্গ বা গহ্বর গ্যাস ধারণ করতে সক্ষম। যদিও প্রথম তৈরি কাঠামো সরাসরি কোনো ব্যবহারিক কাজে লাগছিল না, তবে এটি আণবিক কাঠামো ডিজাইনে নতুন ধারার সূচনা করে।
ওমর ইয়াগি ধাতব-জৈব কাঠামোর নকশাটিকে আরও নিয়ন্ত্রিত ও ব্যবহার উপযোগী করে তোলেন। তাঁর দল বিভিন্ন আয়ন ও জৈব অণু ব্যবহার করে বহু ধরনের ধাতব-জৈব কাঠামো তৈরি করেন। এই কাঠামোতে গ্যাস শোষণ, দূষণমুক্ত পানি তৈরি, হাইড্রোজেন সংরক্ষণ এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত কাজ সম্ভব হয়।