আমাদের বাসায় একটি দোয়েল পাখি এসেছিল
কয়েক মাস আগের কথা। আমরা দুই ভাই–বোন বাসায় খেলছিলাম। বাইরে প্রচণ্ড বেগে বাতাস বইছিল আর বৃষ্টি পড়ছিল। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ একটি পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ শুনতে পেলাম। মনে হচ্ছিল, পাখিটা আমাদের পাশেই কোথাও ডাকছে। চারপাশে তাকালাম। দেখলাম, আলমারির ওপর ছোট্ট একটা দোয়েলের বাচ্চা। বুঝলাম, বাইরে প্রবল বৃষ্টি পড়ার কারণে সে পথ না দেখে জানালা দিয়ে আমাদের বাসায় ঢুকে পড়েছে। বাসার সবাইকে পাখিটা দেখালাম। আব্বু বলছিল, যেখানে আছে, সেখানে থাক। কিছুক্ষণ পর নিজে নিজে চলে যাবে। কিন্তু কিছুক্ষণ না...অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে দেখলাম, দোয়েলের বাচ্চাটা যাচ্ছেই না। ভাবলাম একটু ভয় দেখাই, তাহলে জানালা দিয়ে নিজে নিজে চলে যাবে। কিন্তু সে গেল তো না; বরং আমাদের বাসার এদিক–ওদিকে ঘোরাফেরা শুরু করল। কয়েকবার ফ্যানেও বাড়ি খেলো। ফ্যান বন্ধ করে দিলাম। এরপর আমরা তিন ভাই–বোন মিলে মিশন স্টার্ট করলাম। অনেক চেষ্টা করলাম পাখিটাকে জানালা দিয়ে বের করার, কিন্তু ব্যর্থ হলাম। সে আমাদের ভয়ে পুরো বাড়ি ঘুরতে পারছিল, শুধু জানালাটাই ওর চোখে পড়ছিল না। জানালার কাচেও কয়েকবার ঠোকর মারল, তবু জানালা দিয়ে বের হলো না। এরপর ভাবলাম, এবার আর ভয় দেখাব না। সোজা পাখিটাকে ধরে ফেলব। একে একে আমরা সবাই চেষ্টা করলাম, আম্মুও যোগ দিল আমাদের সঙ্গে। তবু সফল হলাম না।
প্রায় আধা ঘণ্টা দোয়েলের পেছনে চেষ্টা করলাম। শেষ পর্যন্ত আপু আর আম্মু ক্লান্ত হয়ে নিচে চলে গেল। কিন্তু আমরা দুই ভাই–বোন চেষ্টা করেই যাচ্ছি। শেষে মাথায় একটা বুদ্ধি এল। দুজন মিলে পলিথিন দিয়ে পাখিটাকে ধরে ফেললাম। তারপর খুশিতে বাসার সবাইকে দেখালাম। ততক্ষণে বৃষ্টি কিছুটা কমে গিয়েছিল। তাই আমরা বাইরে গিয়ে দোয়েলকে পলিথিন থেকে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দিলাম। সে খুশি হয়ে আকাশে উড়তে লাগল। দুজন তাকে বিদায় দিয়ে বাসায় ফিরলাম।
লেখক: শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় শ্রেণি, আশরাফুল উলুম নূরানী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম