মায়েরা ইচ্ছা হলেই বৃষ্টিতে ভিজুক
আমার মা আমার পৃথিবী। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি, চাকরি, সংসার আর আমাদের দুই বোনকে একা হাতে সামলেছে আম্মু।এত টাকা বেতন পেয়েও কখনো তাকে একটা দামি ব্যাগ কিনতে দেখিনি। অথচ আমি চাই মা একটু বিলাসিতা করুক। দুপুরে খাওয়ার পর একটা উপন্যাস নিয়ে বসুক। কিংবা কবেকার ফেলে আসা সেই চঞ্চল কিশোরী হয়ে উঠুক। যার দুচোখ ভরা কৌতূহল, স্বপ্ন। কিন্তু কে জানত, এসব স্বপ্ন নিয়ে একদিন এই মেয়েটা সংসারের জাঁতাকলে পড়বে! দারুণ গান গায় আমার মা। যখন মাকে জিজ্ঞেস করি, গানটা শিখলে না কেন? বলল, ‘গান শিখব! অত সাহস আছে নাকি বাপু? আমাদের পরিবারে মেয়েদের গান শেখার চল নেই। বাপ–ভাই আস্ত রাখত না জানতে পারলে।’ অথচ আমি জানি, মা এখনো গান ভালোবাসে। যদিও আম্মু কখনো বুঝতে দেয় না। একটা হাসি দিয়ে বলে, ‘এখন তো তোরাই আমার পৃথিবী। তোদের স্বপ্নপূরণ মানেই আমার স্বপ্নপূরণ।’ জীবনে যত সমস্যা এসছে, আমায় দুহাতে আগলে রেখেছে আম্মু। এই যে বাসা থেকে দূরে থাকি পড়াশোনার জন্য, এখানেও তার সাহস ছাড়া এগোতে পারি না। আমার অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন, রাগ, দুঃখ, পুরোটাই মায়ের ওপর দিয়ে যায়। অথচ নিজের দুশ্চিন্তা কোনো দিন বুঝতে দেয় না মা।
এই মায়েদেরও আমাদের মতোই দুচোখ ভর্তি স্বপ্ন ছিল একসময়। আমি চাই মায়েরা ইচ্ছা হলেই বৃষ্টিতে ভিজুক। নতুন করে স্বপ্ন দেখুক। মায়েরা দীর্ঘজীবী হোক!