আমার প্রতিদিন ঘরে ফিরে আসার কারণ
আম্মু ছাড়া যে আমার আর কেউ নেই, সে কথা প্রথম বুঝতে পারি এইচএসসি পরীক্ষার সময়। আম্মু ব্রেনস্ট্রোক করে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। চিকিৎসকেরাও প্রায় হতাশ। আমার তখন পরীক্ষা। বাসায় অন্যরা সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন, আমাকে হাসপাতালে যেতে দেওয়া হবে না। আম্মুকে ওই অবস্থায় দেখলে হয়তো আমি মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়ব।
গেলাম না হাসপাতালে। কিন্তু যে পরীক্ষাগুলোর জন্য আমাকে যেতে দেওয়া হলো না, সেই পরীক্ষাগুলোও খারাপ হচ্ছিল। খারাপ না হয়ে কী হবে? আমি যে পড়তে পারি না! লিখতে গেলে হাতে শক্তি পাই না! বাসায় আম্মু নেই। আম্মুর বকাঝকা নেই। আম্মুর হুটহাট গুণগুণ করে গেয়ে ওঠা নেই। আমার কি আর পড়ায় মন বসে?
আম্মু হাসপাতাল থেকে একদিন ফিরে এলেন। সুস্থ হয়ে উঠলেন। আমার বুকের ভেতর জমে থাকা বিরাট বোঝাটা নেমে গেল। আম্মুকে কখনো বলা হয়নি, আম্মু, তুমিই আমার সবচেয়ে বড় পিছুটান। প্রতিদিন আমার ঘরে ফিরে আসার একমাত্র কারণ। আমার একমাত্র আশ্রয়। জীবনে চলার পথে হোঁচট খেয়ে বারবার উঠে দাঁড়াই কেবল তোমার জন্য। হারতে হারতেও বারবার ঘুরে দাঁড়াই তোমার কথা ভেবেই। রৌদ্রতপ্ত সময়গুলোতে আমার মাথার ওপর এ রকম ছায়া হয়ে থেকো সব সময়!
অনিক মাহতাব মুশফি
প্রথম বর্ষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম