সম্পাদকীয় | নভেম্বর ২০২৫
একটা ধাঁধা জিজ্ঞেস করি। কোন চাবির তালা নেই?
উত্তর: কি-বোর্ডের কি। এগুলো চাবি বটে, তবে এসবের কোনো তালা নেই।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের নাম তোমরা নিশ্চয়ই জানো। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তাঁর ‘আমার বোকা শৈশব’ নামের একটা বই আছে। তাতে তিনি ছোটবেলায় কী কী বোকামো করেছিলেন, সেসব লিখেছেন। একবার তাঁর বাবা তাঁকে তালা কিনতে বাজারে পাঠালেন। বালক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তালা কিনলেন, কিন্তু চাবি আনলেন না। কারণ, বাবা তাঁকে তালা কিনতে বলেছেন, চাবি তো কিনতে বলেননি। চাবি চাইলে যদি বিক্রেতা দাম বেশি চেয়ে বসেন!
তালা কিনলে চাবিও পাওয়া যাবে। এমন কোনো তালা বিক্রি হয় না, যার চাবি নেই। তেমনি পৃথিবীতে এমন কোনো সমস্যা পাওয়া যাবে না, যার সমাধান নেই।
আচ্ছা, ১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। তাঁর বই থেকে একটা কৌতুক বলি। ‘রিকশাওয়ালা, যাবেন নীলক্ষেত?’
‘যামু।’
‘কত ভাড়া?’
‘৫০ টাকা।’
‘কী বলছেন। ওই তো নীলক্ষেত দেখা যাচ্ছে? এত ভাড়া চাইছেন কেন?’
‘জায়গা দেখা গেলেই কাছে হয় না। আকাশের চান্দও তো দেখা যায়।’
এটাও একটা শিক্ষা বটে। গন্তব্য দেখা গেলেই কাছে হয় না। চোখের দেখা আর বাস্তবতা ভিন্ন হতে পারে। আমরা অনেক সময় কাজের শেষের অংশটুকু তাড়াহুড়া করে ফেলি। শেষটা দেখা যাচ্ছে, এই তো হয়ে যাবে। ধরো, একটা বৃত্ত আঁকতে গিয়ে তাড়াতাড়ি শেষ করতে গিয়ে যদি শেষ অংশটা সরল রেখা এঁকে ফেলি, তা আর বৃত্ত হবে না।
ধৈর্য, কল্পনা আর বাস্তবতাকে মিলিয়ে চলা—এসবই আমাদের জীবনে কাজে লাগে।
