ছোটবেলার ক্ষুদ্র একটা স্মৃতি স্প্রিংয়ের মতো বেরিয়ে এল। সেই কবে এক ঈদে পালাগান শুনতে গিয়েছিলাম ছোটবেলায়; সেই তারাভরা রাত—কুপির ধোঁয়া ওঠা আলো আর খড়ের গন্ধে বসে গান শুনছি। ময়মনসিংহে ‘শিরনি’ বলে ছোট ছোট (আমার চেয়েও) ছেলে আর মেয়েরাও কেমন ভরাট গলায় গান গায়, পেছনে গেরুয়া পরে নাচানাচি করে সত্যিকারের বাউল। অথচ মনে করতাম এগুলো ছবিতেই সম্ভব। নিজের গ্রামে গিয়ে যখন দেখলাম, মনে হচ্ছিল হয়তো কেউ পর্দায় পুরো দৃশ্য দেখছে। আমি ওই সিনেমার দৃশ্যের অংশ হয়ে গেছি। এই স্যাটেলাইটের দিনেও মাটি কামড়ে বুড়ো অশ্বত্থের মতো বেঁচে আছে এটা। মনের মধ্যে এখনো গুনগুন করে ওঠে। মৃদু অন্ধকার রাতের সেই পালার সুর...এই বিশ্ব বাগানে, সাঁই নিরঞ্জন...’ হাড়ভাঙা দারিদ্র্য চেপে কেমন হাসিমুখে গান গায় এরা। কেমন আধ্যাত্মিকতা জাগিয়ে দেয় মনে। অথচ এখন এই পালা অসাড় হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে মনে হয় সময়ঘড়ি থাকলে আসলেই ভালো হতো। অন্তত একবার দেখে আসতে পারতাম জৌলুশভরা পালা। সিনেমা তো কতই দেখা হলো!